সৌরভ গাঙ্গুলির প্রচার দেখে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মিলছে না কোনো সুযোগ সুবিধা। উপরন্তু, চুক্তি-বহির্ভুত ভাবে ফ্ল্যাটের মালিকদের কাছে থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছে মালিকপক্ষ। এমনই অভিযোগ তুলে সৌরভ গাঙ্গুলি এবং আবাসনের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে মহেশতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন আবাসিকেরা। পাশাপাশি, আবাসনে নিরাপত্তাজনিত সমস্যার সমাধানও চান তাঁরা। ১২৭ জনের সই সহ অভিযোগপত্র জমা পড়েছে পুলিশের কাছে। বিভিন্ন মিডিয়া সূত্রে এমন জানা যাচ্ছে।
অভিযোগকারীরা জানান, ২০১৩ সালে আবাসনের কাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৫ সালে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় গিয়ে ওই আবাসন উদ্বোধন করেন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি, অভিনেতা-সাংসদ দেব এবং মালিক নিজে। উদ্বোধনের পাশাপাশি, ফিল্ম সিটি, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্রিকেট অ্যাকাডেমি ও হাসপাতাল উদ্বোধনের ঘোষণা করা হয়। সৌরভকে নিয়োগ করা হয় প্রকল্পের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ হিসাবে। এরপর থেকে শুরু হয় প্রচার। টিভিতে বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি সারা শহর জুড়ে হোডিং লাগানো হয়। আর তার মুখ সৌরভ গাঙ্গুলি।
অভিযোগকারীদের দাবি, সৌরভ গাঙ্গুলির কথায় আস্থা পেয়েই ফ্ল্যাট কিনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা পূরণ করা হয়নি। আবাসনে জলের সমস্যা রয়েছে। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা সেই ভাবে নেই। আবাসনে সিসি ক্যামেরার সংখ্যাও কম। আর যেগুলি লাগানো রয়েছে, সেগুলির অধিকাংশই আবার খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। এমনকি প্রায়ই বিকল হয়ে যায় আবাসনের লিফ্টও। বেশ কয়েক বার আবাসিকরা লিফ্টে আটকেও পড়েছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। এছাড়া, আবাসনে মধুচক্র চলে বলেও অভিযোগ তুলেছেন আবাসিকরা।
অন্যদিকে, ২০১৭ সালে ফ্ল্যাটের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত অনেকে ফ্ল্যাট পায়নি। চুক্তি-বহির্ভুত টাকাও চাওয়া হচ্ছে। এছাড়া, চুক্তি-ভিত্তিক ৮০ শতাংশ টাকা শোধ হয়ে গেলেও চুক্তি বাতিল করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে। ২০১৫ সালে যাঁরা ফ্ল্যাট কিনেছিলেন, তাঁদের অনেকেই কম দামে ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, সেই সময় সৌরভ গাঙ্গুলির কথার উপর ভরসা করে যেহেতু তাঁরা ফ্ল্যাট কিনেছিলেন, সেকারণে ‘প্রচারক’ হিসাবে সৌরভও এর দায় এড়াতে পারেন না। কারণ, তাঁর প্রতিশ্রুতিতেই অধিকাংশ লোক ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হয়েছিলেন।
যদিও এই ব্যাপারে এক সংবাদ মাধ্যমে সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, তিনি এই প্রজেক্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন মাত্র। এর সঙ্গে তাঁর আর কোনও যোগ নেই। তিনি এ বিষয়ে কিছু জা্নেন না। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসাবে তাঁর যে টাকা পাওয়ার কথা ছিল, তিনি নিজেই সেই টাকা এখনও পাননি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন