নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গতকাল রাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রোমোটার অয়ন শীল, যিনি ধৃত এবং বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। অয়ন শীলের অফিস এবং একাধিক ফ্ল্যাটে প্রায় ৩৭ ঘন্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। প্রোমোটারের সল্টলেকের অফিস থেকে প্রচুর ওএমআর শিট ও একাধিক পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে।
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্ত যত এগোচ্ছে তত নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। শুধু ২০১৪-র নয়, ২০১২-র টেট পরীক্ষার্থীদের নামও মিলেছে অয়ন শীলের অফিসে, দাবি ইডি-র। এছাড়াও অয়ন শীলের অফিস থেকে প্রায় ৪০০টি অরিজিনাল ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া OMR শিটগুলি ৬০-৭০টি পুরসভার পরীক্ষার। পাশাপাশি বিভিন্ন পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ডও উদ্ধার হয়েছে ওই প্রোমোটারের অফিস থেকে। এছাড়া ৭টি হার্ডডিস্ক, চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকাও উদ্ধার করেছেন ইডির আধিকারিকরা। দুটি ট্রলিতে এই সমস্ত নথি ভর্তি করা ছিল বলেই জানা যাচ্ছে।
ওই অফিসের দেওয়ালে ঝুলছে বিভিন্ন সরকারি দফতরের NOC সার্টিফিকেট। বাড়ির মালিকের দাবি, সরকারি ঠিকাদার পরিচয়ে এই অফিস ভাড়া নিয়েছিলেন অয়ন শীল।
পুরসভার এক অস্থায়ী সাফাই কর্মী সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন, গত তিনমাসে এই অফিস থেকে প্রচুর কাগজ ফেলা হয়েছে। প্রায়ই ভোরবেলায় এই অফিস থেকে লোকজনকে বেরিয়ে যেতে দেখেছেন বলেও দাবি করেন ওই সাফাই কর্মী।
ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলের ব্যাঙ্কের নথিও যাচাই করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে প্রায় ৫০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কী কারণে ট্রান্সফার করা হয়েছিল তাও খতিয়ে দেখছে ইডি। নিয়োগ দুর্নীতির টাকা হতে পারে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর, শান্তনু ব্যানার্জি বিভিন্ন সময় দুর্নীতির টাকা এই প্রোমোটারের মাধ্যমেই সাদা করতো। যা পরে রিয়েল এস্টেটে কাজে লাগানো হয়েছিল। এছাড়া অয়ন শীলের একটি কোম্পানির হদিশ মিলেছে এবিএস ইনফোজোন প্রাইভেট লিমিটেড নামে। এই কোম্পানিতেও সম্ভবত শান্তনু ব্যানার্জি বিনিয়োগ করেছেন। কিছুদিনের মধ্যেই বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতার মুখোমুখি বসানো হতে পারে অয়ন শীলকে। দুজনের বয়ান রেকর্ড করা হতে পারে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন