তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের কোনও আর্জিই শুনল না কলকাতা হাইকোর্ট। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় লিখিতভাবে বক্তব্য পেশের জন্য হাইকোর্টের কাছে ৩ দিন সময় চেয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মঙ্গলবার সেই আর্জি এককথায় খারিজ করে দিল আদালত। বুধবারই বক্তব্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অভিষেককে। পাশাপাশি, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের রক্ষাকবচের আর্জিও এদিন খারিজ করে দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই আদালতের কাছে লিখিত বক্তব্য পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। একইভাবে লিখিত বক্তব্য জমা দিতে বলা হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। কিন্তু অভিষেকের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বক্তব্য জমা দেওয়ার জন্য আরও ৩ দিনের সময় চান। কিন্তু বিচারপতি তীর্থাঙ্কর ঘোষ সাফ জানান, “আজকের মধ্যেই সমস্ত বক্তব্য জমা দেওয়ার কথা ছিল। আর বাড়তি তিনদিন সময় দেওয়া যাবে না। বুধবারই বক্তব্য জমা করুন।” প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টের সময় এই মামালার পরবর্তী শুনানি।
অন্যদিকে, প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের কাছে রক্ষাকবচ চেয়ে আবেদন করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু মঙ্গলবার সেই আবেদনও খারিজ করে দিলেন বিচারপতি তীর্থাঙ্কর ঘোষ। অভিষেকের পক্ষের আইনজীবী তাও শেষ চেষ্টা হিসেবে আদালতে জানান, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি গত ১০ সেপ্টেম্বর শমন পাঠায় অভিষেককে। ১৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়। এই একই মামলায় এর আগেও তাঁকে শমন পাঠিয়েছে ইডি। কিন্তু কোনও মামলা বিচারাধীন থাকাকালীন কীভাবে নতুন করে শমন পাঠাতে পারে ইডি? তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ইডির হাতে কোনও তথ্য-প্রমাণ নেই। তবুও লোক দেখানোর জন্য তাঁকে বারবার শমন পাঠাচ্ছে ইডি।
কিন্তু আদালতের বিচারপতি এপ্রসঙ্গে বলেন, “নতুন করে রক্ষাকবচের কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ, ইডি আগে থেকেই মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছে যে হাজিরা দিতে ডাকা মানেই গ্রেফতার করা নয়। পাশাপাশি ইডি এখনও পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালনও করেছে।” এদিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আইনজীবীও জানান, “যেখানে গ্রেফতারির প্রশ্নই উঠছে না, সেখানে রক্ষাকবচের কী প্রয়োজন? তদন্তের প্রয়োজনে তাঁকে শমন পাঠিয়ে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। অনেককেই তো এভাবে শমন পাঠানো হয়। কতজনকে গ্রেফতার করা হয়?” শেষপর্যন্ত এই রক্ষাকবচের বিষয়ে আদালত আর কোনও মন্তব্য করবে না বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থাঙ্কর ঘোষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন