এতো শক্তি প্রয়োগ করেও আমার মেরুদণ্ড বাঁকাতে পারছে না - CBI দপ্তর থেকে বেরিয়ে আর কী বললেন অভিষেক?

অভিষেক বলেন, “সময় নষ্ট। জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য, অশ্বডিম্ব। ১০ বছর ধরে সারদা তদন্ত হচ্ছে, একজনও টাকা ফেরত পেয়েছেন? ১৫ বছর ধরে নোবেল চুরির তদন্ত হচ্ছে, নির্যাস শূন্য।“
সাংবাদিকদের মুখোমুখি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
সাংবাদিকদের মুখোমুখি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ছবি সংগৃহীত
Published on

৯ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট পর সিবিআই দফতর থেকে বেরোলেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বেরিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা ও বিরোধীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। যদিও কুন্তলের চিঠির বিষয়ে কিছু জনেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।

সিবিআইকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “যাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করলেন তাঁদের সময় নষ্ট, আমারও সময় নষ্ট। আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য, অশ্বডিম্ব। ১ বছর ধরে এসএসসি তদন্ত হচ্ছে, ১০ বছর ধরে সারদা তদন্ত হচ্ছে, একজনও টাকা ফেরত পেয়েছেন? ১৫ বছর ধরে নোবেল চুরির তদন্ত হচ্ছে, নির্যাস শূন্য।“

নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে অভিষেক প্রথমে বলেন, “অন্য রাজনৈতিক দলের কাউকে ডাকা হলে আদলত বলে দেয় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা যাবে না। ক্যামেরার সামনে সে টাকা নিলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা হবে না। তাঁর কনভয়ের গাড়ি মানুষ মেরে দেবে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে না।“

দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করে বলেন, “পার্থ চ্যাটার্জির বাড়ি থেকে অর্পিতা দেবীর দলিল পাওয়া গিয়েছিল বলে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে, তাহলে প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল পাওয়া গেছে, দিলীপ ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি হবে না কেন? দিলীপ ঘোষ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি বলে? বিজেপির জন্য আইন কি আলাদা? পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে তৃণমূল। শুভেন্দুকে নারদায় টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, ওকে সাসপেন্ড করেছে বিজেপি?”

তৃণমূল সাংসদ বলেন, “আমি বশ্যতা স্বিকার করিনি বলে আমার বিরুদ্ধে ইডি সিবিআই লাগানো হয়েছে। আমি যদি আজ বিজেপি করতাম তাহলে আমি ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে যেতাম। কিন্তু আমি দিল্লির পোষা কুকুর হয়ে থাকব না। তার থেকে রয়াল বেঙ্গল টাইগার হয়ে মাথা উঁচু করে মরা ভালো। সেই কারণে আমাকে যতবার ডেকেছে ততবার এসেছি। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থাগুলির কাছ থেকে এইটুকু সৌজন্য তো আশা করা যায় যে তারা হাজিরা দেওয়ার জন্য অন্তত দু’দিন সময় দিক আমাকে। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে আমাকে ফিরে আসতে হয়েছে।“

“আমি তো কালকেই বলেছি ক্ষমতা থাকলে আমায় অ্যারেস্ট করুক। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, দুর্নীতির প্রমাণ থাকলে অ্যারেস্ট করুক, আমি আদালতে লড়বো। কেউ না বলছে না, কেউ আটকাচ্ছে না। ওনারা পারছেন না কেন? এতো শক্তি প্রয়োগ করে, সমস্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা পিছনে লাগিয়েও আমাদের মেরুদণ্ড বাঁকাতে পারছে না। আপনারা মরে যাবেন, তবুও আমরা বশ্যতা স্বীকার করব না।“    

আগামি পরশু দিন সকালে বাঁকুড়া যাবেন এবং জনসংযোগ যাত্রা শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, “আরও এক মাস রাস্তায় থাকবো। আরও ১০ গুণ মানুষ রাস্তায় নামবে। ২৫ দিন পর কলকাতায় ফিরেছি। জ্বর-গলাব্যথা হয়েছে, বাবা-মা- দলনেত্রী না বলেছিল, তবুও ফিরিনি, সিবিআই-এর জন্য ফিরতে হয়েছে। ইনভেস্টিগেশনের নাম করে কিভাবে এই যাত্রায় বাধা দেওয়া যায়, তার সুপরিকল্পিত অভিসন্ধি এটা।“

এদিন সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে পৌঁছান অভিষেক। বেরিয়েছেন রাত ৮.৩৮-এ। সিবিআই দপ্তর থেকে বেরিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে যান তিনি।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in