'নিঃশর্ত আলোচনায় রাজি ছিলাম...' - নবান্নের পর কালীঘাট থেকেও খালি হাতে ফিরলেন জুনিয়র ডাক্তাররা

People's Reporter: চিকিৎসকরা জানান, "মুখ্যমন্ত্রীর সম্মানের কথা ভেবেই আমরা ভিডিও ছাড়াই মিনিটিসে সই করে বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু শেষে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আমাদের বললেন অনেক দেরি হয়ে গেছে।"।
কালীঘাটে জুনিয়র চিকিৎসকরা
কালীঘাটে জুনিয়র চিকিৎসকরাছবি - সংগৃহীত
Published on

নবান্নের পুনরাবৃত্তি কালীঘাটেও। ফের ভেস্তে গেল জুনিয়র চিকিৎসক ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক। লাইভ স্ট্রিমিং-এর অনুমতিতে প্রথম থেকেই অনড় থাকেন চিকিৎসকরা। কিন্তু পরে সেই দাবি থেকেও সরে আসেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত কেবল মিনিটস দেওয়ার শর্তে বৈঠক করতে রাজি হন তাঁরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও হল না বৈঠক। তাঁরা জানান, 'আমরা হতাশ। আলোচনা করতে এসেছিলাম কিন্তু কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করা হয়েছে।'

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে থেকেই ফিরতে হল জুনিয়র চিকিৎসকদের। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চিকিৎসকরা জানান, "আমরা আলোচনা করতেই এসেছিলাম। প্রথমে লাইভ স্ট্রিমিং, তারপর ভিডিওগ্রাফি নিয়ে জটিলতা হয়েছিল। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সম্মানের কথা ভেবেই আমরা ভিডিও ছাড়াই মিনিটিসে সই করে বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছিলাম। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাসটা রাখলাম। কিন্তু শেষে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আমাদের বললেন অনেক দেরি হয়ে গেছে। আর বৈঠক সম্ভব নয়। হয় তোমরা বেরিয়ে যাও নয়তো বাস ডেকে বের করে দেওয়া হবে"।

তাঁরা আরও জানান, "আমাদের পক্ষ থেকে ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের বলা ভল ভিডিও করা যাবে না। লাইভস্ট্রিমিং না হলেও উভয় পক্ষই ভিডিও করা হোক আমরা চেয়েছিলাম। আমরা হতাশ। মুখ্যমন্ত্রীর সমস্ত দাবি মেনে নেওয়ার পরেও আমাদেরকে ঢুকতে দেওয়া হল না। আমরা স্বচ্ছতা নিয়ে একাধিক দাবি নিয়েছিলাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কোনটাতেই মান্যতা দেননি। তারপর আমরা শর্ত ছাড়াই রাজি হয়েছিলাম। তারপরেও মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করলেন না"।      

এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে জুনিয়র চিকিৎসকরা অপেক্ষা করছিলেন, তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে মমতা ব্যানার্জি তাঁদের বলেন, “আপনাদের চিঠিতে লাইভ স্ট্রিমিং-র কথা ছিল না। আপনারা আমরা পুরো বৈঠকের রেকর্ডিং রাখবো। আদালতে মামলা চলছে। আমি সুপ্রিম কোর্টের আছে অনুমতি নেওয়ার পর আপনাদের ভিডিও হস্তান্তর করব। আমি, আমার মুখ্যসচিব, আমার ডিজি পুলিশ সকলেই ২ ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি। কথা বলতে এসেছো তো ভিতরে এসো। কথা বলতে ইচ্ছা না হলে অন্তত এক কাপ চা খেয়ে যাও”।

পাল্টা চিকিৎসকরা বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকেও ভিডিও করার অনুমতি দেওয়া হোক বা যে ভিডিওটি করা হবে তা আমাদের সাথে সাথেই দেওয়া হোক। আমরা লাইভ চাইছি না। শুধু আজকের বৈঠকের ভিডিওটি লাগবে। কারণ স্বাস্থ্যভবনের সামনে আমাদের সাথীরা বসে আছে। তাদেরকে আমাদের জবাব দিতে হবে”।

মুখ্যমন্ত্রী ফের বলেন, “আমি এর আগেও কিন্তু অপেক্ষা করেছি তোমাদের জন্য। তোমরা বলেছো বলেই আজকে মিটিং ডাকা হয়েছে। কিন্তু তোমরা বাড়ির সামনে এসে মিটিং করছো না। তোমরা কিন্তু আমাকে অসম্মান করছ। কেন এত অসম্মান করছো? মানুষের স্বার্থে মিটিং করো”।

তিনি আরও বলেন, “তোমাদের সব দাবি আমি মেনে নিতে পারব না। আর একজনের বাড়িতে তোমরা ৪০ জন এসেছো। তাও আমি ব্যবস্থা করেছি। বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ কার্যবিবরণী তৈরি করা হবে। আমাদের পক্ষ থেকেও সই করা হবে এবং তোমাদের পক্ষ থেকেও কেউ সই করবে। আমি পুরো বৈঠক রেকর্ড করে রাখব”। কিন্তু এতো কিছু সত্ত্বেও এদিন বৈঠক হল না।

এর আগে নবান্নে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের। সেখানে লাইভস্ট্রিমিং নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। সেই সময় মুখ্যসচিব এবং রাজ্যপুলিশের ডিজি বলেছিলেন, এই ধরণের বৈঠকে লাইভ স্ট্রিমিং-র অনুমতি দেওয়া যায় না।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in