শরীরে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ থাকা কেরালার এক ২২ বছর বয়সী যুবকের গতকালই (১ আগস্ট) মৃত্যু হয়েছে। কেরালা স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই ঘটনার উচ্চপর্যায়র তদন্ত শুরু করেছে। মৃতের সংস্পর্শে আসা সকলকে আইসলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার মাঙ্কিপক্স নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও।
পশ্চিমবঙ্গেও নাগরিকদের সচেতন করতে উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পৌরসভা (KMC)। এই নতুন ভাইরাসের মোকাবিলা করতে পথে নামবে স্বাস্থ্যকর্মীরা। জনসাধারনের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ আছে কি না সেই ব্যাপারে অনুসন্ধান করবেন তাঁরা। রাজ্যের স্বাস্থ্যভবনের তরফে চিকিৎসকদের নিয়ে এই বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের আক্রমণ ২০২০ সাল থেকে শুরু হয়ে এখনও চলছে। এরই মধ্যে উদয় হয়েছে এক নতুন ভাইরাস - মাঙ্কিপক্সের। ভারতে এ পর্যন্ত ৭ জন মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে (৫ জন কেরালার, ১ জন দিল্লির, ১ জন অন্ধ্রপ্রদেশের)। সদ্য রাজস্থানেও একজনের শরীরে মিলেছে এই ভাইরাসের উপসর্গ। তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। যদিও পূর্ব ভারতে এখনও এই ভাইরাসের হদিশ মেলেনি। তবে যেহেতু এই ভাইরাসও করোনার মতোই সংক্রমণকারী, তাই যথারীতি আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) জানায়, বর্তমানে ৭৮ টি দেশ থেকে ১৮,০০০ জনেরও বেশি পজিটিভ কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। মাঙ্কিপক্স হল ‘ভাইরাল জুনোসিস’, অর্থাৎ যা প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রামিত হয়। মাঙ্কিপক্স কোনো যৌনবাহিত রোগ নয়। ক্ষত আছে এমন একজন সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে ত্বক থেকে ত্বকের যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ভাইরাস বডি ফ্লুইড, দূষিত বিছানার চাদর এবং পোশাকের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। কাশি, হাঁচির মাধ্যমেও ছড়াতে পারে এই ভাইরাস।
এখন বর্ষাকাল। এই সময়ে কলকাতা সহ শহরতলীতে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা যায়। এবার তার মধ্যেই অশনি সংকেত এনেছে এই মাঙ্কিপক্স। এই ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর এবার আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করছে। পৌরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে মাইকিং, হোর্ডিং দিয়ে প্রচার করা হবে। নতুন ভাইরাস মোকাবিলা করতে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর কর্মশালা করে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেবে।
আগামী বুধবার (৩ আগস্ট) স্বাস্থ্যভবনে রাজ্যের অন্যান্য পৌরসভাগুলিকেও ডাকা হয়েছে। ইতিমধ্যে মাঙ্কিপক্স নিয়ে সোমবার (১ আগস্ট) KMC-তে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্য অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা পল্লব ভট্টাচার্য্য, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ ও রাজ্যের অন্যান্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। জ্বর, গায়ে চুলকুনি, ছোট ছোট ফোসকা, দেহে বসন্ত রোগের মতো ফুসকুড়ি দেখা দিলে দেরি না করে পৌরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। মাঙ্কিপক্স অবশ্য কোভিডের মত শক্তিশালী ভাইরাস নয়, তাই অযথা আতঙ্কিত হবার কিছু নেই, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন