সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের অভিযোগেরই সত্যতা প্রমাণিত হলো। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হেনস্থার ঘটনায় নাম জড়ালো রাজ্যের দুই মন্ত্রীর। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে উপাচার্যকে অপমান করে সরানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অডিওতে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী গোলাম রব্বানী, তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের নামও শোনা গেছে। পিপলস রিপোর্টার এই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি।
এই অডিওটি সামনে এনেছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ক্লিপে দুজনের গলা শোনা যাচ্ছে। পড়ুয়াদের দাবি, এই দুজনই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং দুজনই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী হিসেবে পরিচিত এলাকায়।
ক্লিপটিতে একজনকে অন্যজনের উদ্দেশ্যে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'গোলাম রব্বানী এবং ববি দা পুরোপুরি বলে দিয়েছেন। এক সপ্তাহের মত টাইম দিয়েছিল। বলেছেন, তুমি বেরিয়ে যাও, নতুন ভিসি আসবে, তোমাকে বলে দিলাম আজকে, কে আসবে সেটাও জানি। ওকে ভিজিবল ডেট দিয়ে দিয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ওকে বার হতেই হবে। কিন্তু ওকে অপমান করে তাড়াতে বলেছে আমাকে।' তখন অন্যজন বলছেন, 'এটা কি নেতৃত্ব বলছে?' উত্তরে প্রথম জন বলেন, 'একদম একদম। কিন্তু সেটা শুধু তুমি আর আমি জানব।' দ্বিতীয়জন পাল্টা প্রশ্ন করেন 'এর প্রুভড আছে তো? নাকি শেষে উল্টে যাবে বলবে আমরা বলিনি, ওরা নিজের মত করেছে?' প্রথম জন বলেন, 'নাদিমূল সাহেব আমার সামনে বসেই ফোন করলেন।' এরপর প্রথম জন দ্বিতীয় জনের কাছে জানতে চান নাদিমূল সাহেবকে তিনি চেনেন কিনা। দ্বিতীয়জন বলেন, নাদিমুল সাহেব হজ কমিটির চেয়ারম্যান এবং রাজ্যসভার এমপি।
সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম আগেই উপাচার্যকে হেনস্তার ঘটনায় তৃণমূলের মন্ত্রীদের যুক্ত থাকার অভিযোগ করেছিলেন। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, "আমি জোরের সঙ্গে বলতে পারি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী একদম পরিকল্পিতভাবে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। তারজন্যই পুলিশকে গুন্ডামির সময় যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। এই ঘটনার পেছনে তৃণমূলের যে নেতা ও মন্ত্রীরা যুক্ত তাঁদের ধরতে হবে।"
এই অডিও প্রকাশ্যে আসতে সেলিমের অভিযোগেরই সত্যতা প্রমাণিত হলো। যদিও ফিরহাদ হাকিম এবং গোলাম রব্বানী দুজনই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, তিনি এই ধরনের কোনো নির্দেশ দেননি। অন্যদিকে রব্বানীর বক্তব্য, কোনো অডিওতে কেউ তাঁর নাম বললে এতে তাঁর কি করার আছে? তাঁর কণ্ঠস্বর তো শোনা যায়নি এখানে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন