Anis Khan Case: আনিস কাণ্ডে ফের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, আপাতত রায়দান স্থগিত রাখল হাইকোর্ট

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা জানান, পুলিশের ভূমিকা বাদ দিয়ে কোনোভাবেই এই মামলা হতে পারে না। গোটা মামলায় অভিযোগ শুধুমাত্র পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই পুলিশই আবার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে।
আনিস খান (ইনসেটে)
আনিস খান (ইনসেটে)ফাইল চিত্র
Published on

ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যু মামলায় ফের রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললো কলকাতা হাইকোর্ট। যে কারণে আপাতত আনিস মামলায় রায়দান স্থগিত রাখল হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও মূল অভিযুক্তদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি সিট।

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে আনিস খান মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে আদালতের তরফে বলা হয়, "একটা মামলায় অভিযোগ শুধু পুলিশেরই বিরুদ্ধে। এরপরও মনে হয় সেই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস রাখবে?" ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে করা মামলার শুনানি গতকালই শেষ হয়েছে। কিন্তু পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জট না কাটায় রায়দান আপাতত স্থগিত রেখেছে আদালত।

যদিও মামলার প্রথম দিন থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এ প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এদিন জানান, পুলিশের ভূমিকা বাদ দিয়ে কোনোভাবেই এই মামলা হতে পারে না। গোটা মামলায় অভিযোগ শুধুমাত্র পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই পুলিশই আবার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন - কোন পদমর্যাদার পুলিশ তদন্ত করছে তা দেখার দরকার নেই কারণ, মূল অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধেই। অভিযোগ এসেছে যে, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ফোনের পরেই আনিসের বাড়িতে পুলিশি অভিযান চলেছে। সেই পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য কোথায়? শুধু তাই না, এই ঘটনায় দেখা গেছে এক থানার পুলিশ অন্য থানায় গিয়ে অভিযান চালিয়েছে। এটা কী করে হয়? সেই রিপোর্ট কোথায়? এই প্রক্রিয়াটিও তো ত্রুটিপূর্ণ। এই ঘটনায় অভিযোগ যখন পুলিশের বিরুদ্ধেই, তখন কী করে মানুষের আর পুলিশের তদন্তে বিশ্বাস থাকবে?

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আনিসের পরিবারের পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, আদালত পুলিশকে সত্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য পুলিশ সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ওই ছাত্রনেতাকে তো আগেই খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

বিকাশবাবু আরও জানান, আনিসের বাড়ি পুলিশ ঘিরেছিল কেন? আনিসকে ধরাই তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল। শুধু আনিসের বাড়িতে নয় গোটা এলাকায় পুলিশ ছিল। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। স্বাভাবিকভাবেই তা পুলিশের তদন্তে আসছে না।

মঙ্গলবারের শুনানিতে আনিসের পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সব্যসাচী চ্যাটার্জি, ইমতিয়াজ আহমেদ, সামিম আহমেদ।

তবে রাজ্য সরকার জানিয়েছে সিটের তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। কিন্তু আনিসের বাবা সালেম খান বারবার অভিযোগ করেছেন যে, পুলিশই খুন করেছে আনিস খানকে। আগেও সিটের রিপোর্ট নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল না আনিসের পরিবার। একাধিকবার তাঁরা হাইকোর্টের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। সিট তাঁদের কোনও তথ্য দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছিলেন আনিস খানের বাবা।

প্রসঙ্গত, আনিস খানের প্রথম ময়না তদন্তের রিপোর্টের সাথে দ্বিতীয় ময়না তদন্তের রিপোর্টের বেশ ফারাক রয়েছে। আনিসের দ্বিতীয় ময়না তদন্তের রিপোর্টে দেখা গেছে যে আনিসের দেহের বিভিন্ন অংশের হাড় ভাঙা রয়েছে। যা আগের রিপোর্টে ছিল না।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in