যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় এবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো অরিত্র মজুমদার ওরফে আলুকে। মঙ্গলবার যাদবপুর থানায় মাঝরাত পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পড়ুয়া মৃত্যুতে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠতেই এই আলুর নামে একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে।
শুধু অরিত্র নয় তাঁর সাথে আরও এক পড়ুয়া রুদ্র চট্টোপাধ্যায়কেও জেরা করে পুলিশ। বয়ান নেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা।
পুলিশ সূত্রে খবর, যাদবপুরে গবেষণারত পড়ুয়া আলু প্রবাভশালী ছাত্রনেতা ছিলেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। তাঁর নির্দেশেই নাকি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সমস্ত জিবি মিটিংগুলি হতো। ধৃত সৌরভ চৌধুরী ঘটনার দিন অরিত্রকে ফোন করেছিলেন। হস্টেলের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজে থাকলেও ওইদিন আলু ঠিক কোথায় ছিলেন? ঘটনার পর থেকে কেন তাঁকে দেখা যায়নি? এতদিনই বা কোথায় ছিলেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানার জন্যই তাঁকে জেরা করা হয়।
পুলিশি জেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয় রুদ্রকে। কিন্তু রাত দেড়টা পর্যন্ত আলুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যাদবপুর থানায় ঢোকার সময়ও আলুকে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী দেখা গিয়েছিল। পুলিশের কাছে তিনি নাকি জানিয়েছেন, ৯ অগাস্ট হস্টেলেই ছিলেন না তিনি। ট্রেকিং করতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ১০ অগাস্ট কলকাতার বাইরে চলে যান। তিনি কাশ্মীরে গিয়েছিলেন।
নিজের ফেসবুক পোস্টে মঙ্গলবার অরিত্র কাশ্মীর যাওয়ার প্রমাণ হিসাবে বিমানের টিকিটের ছবি পোস্ট করেছেন। যদিও সেই টিকিটের ছবি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয় সমাজমাধ্যমে। কারণ গত ৩ মে থেকে উড়ান বন্ধ হওয়া গো ফার্স্ট সংস্থার বিমানের টিকিট দেখিয়েছেন তিনি। যদিও অরিত্র দাবি করেছেন তিনি একথা জানতেন না। ৯ আগস্টই একথা জানতে পেরে রাত ১২ টা ৩৮ মিনিটে নতুন করে একটি টিকিট কেতেছেন তিনি। অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার খাতায় ঘটনার দিন এবং তার পরের দিনও তাঁর সই রয়েছে, যা নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
পাশাপাশি বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটিও জিজ্ঞাসাবাদ করে আলুকে। রেজিস্টারে ১১ তারিখেও সই থাকার বিষয়ে আলু বলেন, তিন দিনের সই একসাথে করতে গিয়েই ভুল হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই প্রথম থেকেই দাবি করছে র্যাগিংকাণ্ডের সাথে এই অরিত্র মজুমদার জড়িত। ঘটনার পর থেকে দক্ষিণ কলকাতাতেই এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার বাড়িতে লুকিয়ে রয়েছেন তিনি। যদিও লুকিয়ে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অরিত্র মজুমদার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন