সোমবার, গান্ধীমূর্তির পাদদেশে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) সভায় বক্তব্য রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে দুর্নীতি, বেকারত্ব, বঞ্চনা, ‘ভিক্ষা’ (অনুদান) নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন কলেজের চাকরী প্রার্থীরা। এ নিয়ে ছাত্র, যুব সম্প্রদায়ের কাছে ৭ দফা তথ্যভিত্তিক অভিযোগ তুলে ধরেছেন তাঁরা।
২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনে মেধাতালিকাভুক্ত চাকরীপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন দাবি করে আসছে, দুর্নীতির কারণে তাঁদের চাকরি হয়নি। বঞ্চনার শিকার হয়েছেন তাঁরা। এ নিয়ে আদালতে ১৭০ টি মামলাও হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির সকল তথ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে, কিন্তু সরকারের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ চাকরীপ্রার্থীদের। অন্যদিকে, সরকার নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোটি কোটি টাকা তুলতে চেষ্টা করছে। সে কথাও এ দিন বলা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
৭ দফা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, রাজ্যে প্রাথমিক, হাই স্কুল, কলেজে কয়েক লক্ষ শিক্ষকের শূন্যপদ পড়ে অথচ বেকারত্বের যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছে শিক্ষিত যুবকরা। তাঁদের নিয়োগের বিষয়ে সরকারের কোনও উদ্যোগ নেই। প্ৰকৃত শিক্ষা না দিয়ে ভিক্ষা দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।
সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে দুর্নীতির অভিযোগ করছেন তাঁরা। এর মধ্যে কিছু কিছু প্রমাণও হয়েছে। নিয়োগ-দুর্নীতিতে আরও অসংখ্য মামলা আদালতে বিচারাধীন৷ অযোগ্য, কম যোগ্যদের দুর্নীতি করে, টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন তাঁরা।
অভিযোগ, দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত, যোগ্য, মেধাতালিকাভুক্তদের নিয়োগে সরকারের উদ্যোগ নেই। ‘সিভিক’ পদ্ধতিতে সমস্ত দফতর চালানোর চেষ্টা। যুবকদের চাকরি না দিয়ে, কর্মচারীদের ডিএ না দিয়ে সেই টাকা ব্যয় করা হচ্ছে খেলা, মেলা, অনুদান ও সরকারের প্রচারে। অথচ বলা হচ্ছে, সরকারের নাকি টাকা নেই।
প্রসঙ্গত, এসএসসি (SSC) নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জী সহ একাধিক আধিকারিক গ্রেফতার হয়েছেন। প্রাথমিকে (TET) দুর্নীতির নিয়োগ নিয়েও তদন্ত চালাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা। তবে কলেজ সার্ভিস কমিশনে দুর্নীতির বহর এসএসসিকে ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করে আসছে ২০১৮ সিএসসি এমপ্যানেলড ক্যান্ডিডেট অর্গানাইজেশন-এর সদস্যরা।
রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীসহ কলেজ সার্ভিস কমিশন ও শিক্ষা দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একাংশ, অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের একাংশ এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বলে তাঁরা একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছেন। এবার, আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি বৃহত্তর আন্দোলনের পথে পা বাড়াতে চলেছেন সংগঠনের সদস্যরা। তার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন