ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সিপিআই(এম) প্রার্থী হচ্ছেন শ্রীজীব বিশ্বাস। পেশায় আইনজীবী শ্রীজীবের নাম এদিন বামফ্রন্টের বৈঠকে চূড়ান্ত হয়েছে। ভবানীপুর ছাড়াও সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গীপুর কেন্দ্রের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন যথাক্রমে সিপিআই(এম)-এর মোদাসসার হোসেন এবং আরএসপি-র জানে আলম মিয়াঁ।
৩১ বছরের শ্রীজীব বিশ্বাস ভবানীপুরের বকুলবাগানের বাসিন্দা। এলাকায় অত্যন্ত পরিচিত শ্রীজীব ছাত্রজীবন থেকেই বাম রাজনীতির সাথে জড়িত। হাজরা ল কলেজ থেকে ২০১৩ সালে আইন পাশ করে এই মুহূর্তে আলিপুর জজ আদালতে প্র্যাক্টিস করেন তিনি।
সূত্রের খবর, এর আগে ভবানীপুরে প্রার্থী হিসেবে ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান দাশগুপ্তের নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু পরে সেই নাম বাতিল করে শ্রীজীব বিশ্বাসের নাম ঘোষণা করা হয়।
এদিন বামেদের পক্ষ থেকে প্রার্থী ঘোষিত হলেও ভবানীপুর কেন্দ্রে বিজেপির পক্ষ থেকে কে প্রার্থী হবেন তা এখনও ঘোষিত হয়নি। অন্যদিকে এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে গেলে আগামী নভেম্বরের মধ্যে তাঁকে রাজ্য বিধানসভায় নির্বাচিত হতে হবে।
শেষ বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলো কংগ্রেস। যদিও গতকাল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, ভবানীপুরে কংগ্রেস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেনা। এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের বলেও তিনি জানিয়েছেন।
গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরী জানান, ভবানীপুরে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে গতকাল প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত কংগ্রেস নেতৃত্বের একটি বড় অংশের দাবি ছিল ভবানীপুরে প্রার্থী দিক দল। আর একটি অংশের দাবি ছিল প্রার্থী দেবে না দল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে সমস্ত কথা হাইকমান্ডকে জানিয়েছিলাম আমি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিলাম আমি। সেই মতো অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি আমাকে জানিয়েছে উপনির্বাচনে ভবানীপুরে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা নিয়ে এর আগেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদীকে উদ্ধৃত করে ৪ সেপ্টেম্বরের ঘোষণায় জানায়, তিনি (মুখ্যসচিব) ভারতের সংবিধানে-এর ১৬৪(৪) ধারা উদ্ধৃত করে জানিয়েছেন, একজন মন্ত্রী, যিনি রাজ্য বিধানসভার সদস্য নন তিনি যদি পরবর্তী ছ’মাসের মধ্যে নির্বাচিত না হন তাহলে তাঁর মন্ত্রীত্ব চলে যায়। যদি দ্রুত নির্বাচন না করা হয় তাহলে রাজ্যের শীর্ষপদ খালি হলে সাংবিধানিক সঙ্কট ও শূন্যতা তৈরি হবে। কমিশন আরও জানায়, তিনি আরও জানিয়েছেন, জনস্বার্থে এবং রাজ্যে শীর্ষস্তরে শূন্যতা এড়াতে কলকাতার ১৫৯ ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন জরুরি। উপনির্বাচন হলে যে কেন্দ্র থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।
কমিশনের ঘোষণা প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ এবং সেফোলজিস্ট বিশ্বনাথ চক্রবর্তী জানান, রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসেবে তিনি এরকম বলতে পারেন না। মমতা ব্যানার্জিকে বিজয়ী করার দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়নি। এখনও প্রার্থী ঘোষণা হয়নি এবং কে প্রার্থী হবেন তা কোনোভাবেই তাঁর পক্ষে জানা অসম্ভব।
প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের ভবানীপুর কেন্দ্র উপনির্বাচন এবং জঙ্গীপুর ও সামশেরগঞ্জ কেন্দ্রে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করা হয়। কমিশনের ঘোষণা অনুসারে এই তিন কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ফলাফল ঘোষিত হবে ৩ অক্টোবর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন