বেঁচে থাকার লড়াই জারি রাখতে আবারও রাজপথে রাজ্যের বিড়ি শ্রমিকরা রাজ্যসরকার নির্ধারিত ২৬৮ টাকা মজুরি, ৩ হাজার টাকা মাসিক পেনশন এবং স্বাস্থ্য বিমা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালুর দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার, রাজ্যপাল ও রাজ্য শ্রম দফতরে ডেপুটেশন জমা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিড়ি শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের মঞ্চ ‘যৌথ সংগ্রাম কমিটি’। মঙ্গলবার কলকাতার রানী রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বিড়ি শ্রমিকদের এই যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়।
সমাবেশের মাঝে এদিন যৌথ সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক দেবাশিষ রায় বলেন, ‘বিড়ি শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা চলে যাচ্ছে, তাঁরা ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছে না। বিড়ি শ্রমিকদের জন্য যৎসামান্য যে সামাজিক সুরক্ষা কিছুটা আদায় করা গিয়েছিল, তাও আর নেই। কেন্দ্রীয় সরকার নতুন যে শ্রম কোর্ট করেছে, এবং তার ভিত্তিতে আজকের সমস্ত সামাজিক সুরক্ষাকে এক জায়গায় করে দিয়েছে। অথচ আমরা দেখছি নির্মাণে চালু আছে, ফিশারম্যানে চালু আছে। কিন্তু বিড়ি শ্রমিক, যারা হেলথ হেজারড (স্বাস্থ্য ঝুঁকি) কাজ করে, তাঁদের মালিকরা কোনও দায়িত্ব নেয় না, এখন সরকারও দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চাইছে।’
দেবাশিষ বাবু বলেন, ‘শুনতে ভালো লাগছে, ইএসআই (ESI) ট্রান্সফার করা হচ্ছে। কিন্তু, সমস্ত হাসপাতাল, ডিসপেনসারিতে যে সুযোগ পেত বিড়ি শ্রমিকরা, সেটা হয়ে গেছে মালিকের ইচ্ছেধীন।’
শুধু অভিযোগের সুর নয়, দাবিও জানিয়েছেন যৌথ সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক দেবাশিষ রায়। তিনি বলেন, ‘মালিকরা কাউকে স্বীকৃতি দেয় না। ফলে শ্রমিকরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই আমাদের মূল দাবি, বিড়ি শ্রমিকদের সব সুরক্ষা চালু রাখতে হবে। আর পুরো দেশে একটাই মজুরি চালু করতে হবে এবং তা কার্যকর করতে হবে।’
এদিনের বিক্ষোভ সমাবেশে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছিলেন কয়েক হাজার বিড়ি শ্রমিক। কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, তো কারও হাতে লাল ঝাণ্ডা। এক মহিলা বিড়ি শ্রমিকের প্ল্যাকার্ডে লেখা - ‘গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের টাকা মেলে না। থাকব কী খোলা আকাশের নিচে?’
ঠিক সে সময়, তৃণমূল সরকারকে উদ্দেশ্যে করে প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেছে অন্য আরেক মহিলা। ক্ষোভের সুরে তাতে লেখা রয়েছে- ‘রাজ্য সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরিটুকুও পাই না। সরকার উদাসীন। খাবো কী?’
সংগঠনের তরফে জানান হয়েছে, ‘আগামী ৮ সেপ্টেম্বর, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সমাবেশ হবে। বিষয়টি ইতিমধ্যে দিল্লির শ্রমমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। সংসদ চলাকালীন অবস্থান বিক্ষোভ করা হবে।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন