এসএসসি মামলার রায়ের পর আদালতের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর করা সেই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর আবেদন, আদালত যেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, এসএসসি মামলায় ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বর্ধমানের গলসির জনসভায় বিজেপি সম্পর্কে মমতা বলেন, ‘‘এরা কোর্ট কিনে নিয়েছে, আমি সুপ্রিম কোর্টের কথা বলছি না। সিবিআই-কে কিনে নিয়েছে, বিএসএফ-কে কিনে নিয়েছে!’’
মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
আদালতে বিকাশরঞ্জন জানান, ‘‘অপরাধমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে। পদক্ষেপ করা না হলে সবাই আদালতকে দেখে হাসাহাসি করবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর সওয়াল, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আদালত বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বিচারপতির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বিচারপতিরা নিজেদের বিচারবুদ্ধি দিয়ে কাজ করেন। গোটা হাই কোর্ট বিক্রি হয়ে গিয়েছে, এমন মন্তব্য কেন? আদালতের সম্মানহানি হচ্ছে।’’
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সওয়ালের প্রেক্ষিতে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আজ দুপুর ২ টোয় এই মামলার শুনানি বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, শুধু বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যই নন, আইনজীবী তথা বিজেপি নেতা কৌস্তুভ বাগচিও প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করার আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলার রায় দান করে। ২০১৬ সালের গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ, নবম-দশম, একদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ - পুরো প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে আদালত। প্রায় ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হবার পরে যারা চাকরি পেয়েছে তাদের প্রাপ্ত বেতন ১২ শতাংশ সুদ সহ আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। জেলার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা আদালতের কাছে জমা দিতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন