নবান্ন অভিযান শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটের কিছু পরে তিনি এই ঘোষণা করেন। এদিন রাজ্যে দুর্নীতির বিরোধিতা করে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। যদিও শুরুতেই শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চ্যাটার্জি, রাহুল সিনহাকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির এই অভিযান কার্যত গতি হারায়।
এদিন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি লোকসভা সদস্য, লকেট চ্যাটার্জিকে বিদ্যাসাগর সেতুর প্রবেশপথে একটি বিশাল পুলিশ বাহিনী আটকে দেয়। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর মুখে আটকে যাওয়ায় তাঁরা আর হাওড়ার দিকে যেতে পারেননি। এই ব্রিজের অপরপ্রান্তেই নবান্ন অবস্থিত।
উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক বাকবিতণ্ডার পর শুভেন্দু অধিকারী ও লকেট চ্যাটার্জিকে গ্রেপ্তার করে প্রিজন ভ্যানে রাখা হয়। পরে হাওড়ার বিক্ষোভস্থল থেকে গ্রেপ্তার হন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, মহিলা পুলিশ কর্মীদের বিশেষভাবে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে আটক করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল। তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তোলার চেষ্টা করা মহিলা পুলিশ কর্মীদের দিকেও চিৎকার করতে দেখা যায়। শুভেন্দু বলেন, "আপনি একজন ভদ্রমহিলা। আমার গায়ে হাত দেবেন না।"
পরে অধিকারী ও চ্যাটার্জি দুজনকেই লালবাজারে কলকাতা পুলিশের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে আইনের দ্বারস্থ হবার হুমকি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, "বিরোধী দলের নেতার সাথে আচরণ করার উপায় এটি নয়। মহিলা কনস্টেবলরা ক্রমাগত আমাকে ধাক্কা দিচ্ছিল এবং তাঁরা জ্ঞানবন্ত সিং, আকাশ মাগারিয়া এবং সূর্যপ্রতাপ যাদব নামে তিনজন আইপিএস অফিসারের নির্দেশ অনুসারে এটা করছিল।"
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তিন দিনের সরকারি সফরে কলকাতার বাইরে রয়েছেন।
কলকাতার বাইরে থাকার সিদ্ধান্তকে উপহাস করে অধিকারী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির সমাবেশ বন্ধ করতে পুরো পুলিশ বাহিনীকে নিযুক্ত করেছেন। "কলকাতা থেকে পালিয়ে গিয়ে তিনি এই কাজ করেছেন।" উল্লেখ্য, এর আগে বামেদের নবান্ন অভিযানের সময়েও কলকাতায় ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা আক্রমণ করে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিরোধী দলের নেতা নাটকের আশ্রয় নিচ্ছেন। বুঝতে পেরেছেন যে পশ্চিমবঙ্গে তাঁর দলের কোনও গণভিত্তি নেই।
হাকিম আরও বলেন, "বিজেপিতে শুধু নেতা, কর্মী নেই। তাই, কর্মী ছাড়া একটি দল কখনই জনসমর্থন তৈরি করতে পারে না। বিজেপি একটি মূল্যহীন দল যা কিছু কেন্দ্রীয় সংস্থা ব্যবহার করেই টিকে আছে।"
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন