আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান কর্মসূচি রয়েছে ছাত্রসমাজ নামে একটি সংগঠনের। এই কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের। দুটি ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি (যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)। এমনকি ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরেই ঘাটালের দুই বিজেপি নেতাকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ১১ টায় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। কুণাল বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের মিছিল নিয়ে একটা চক্রান্ত চলছে। আমরা তৃণমূলের সবাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকে আরজি করের ঘটনার বিচার চাই। আপনারা যদি বলেন, জাস্টিস ফর আরজি কর, আমরা বলব তোমার আমার এক স্বর। কিন্তু যদি বলেন ‘রিজ়াইন মমতা’। তবে আমরা বলব, ময়দানে বুঝে নেবে বাংলার জনতা। মঙ্গলবারের ওই মিছিল বেআইনি এবং অবৈধ। ওই মিছিলের জন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়নি। ওই মিছিলে বাইরের রাজ্য থেকেও লোক আনা হতে পারে। এমনকি, তাদের পুলিশের নকল পোশাক পরিয়ে গুলি চালানোর মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। কারণ এরা বডি চাইছে।’’
এরপরেই দু'টি ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন তিনি। প্রথম ভিডিয়োয় পর্দায় দেখা যায় এক যুবককে। তবে নেপথ্যে গলা শোনা যায় আরও দু’জনের। এক নেপথ্য কণ্ঠস্বর প্রশ্ন করে, ‘‘২৭ তারিখের যে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ভাবে হবে বলছেন, তা কি আদৌ শান্তিপূর্ণ হবে?’’ জবাবে পর্দায় থাকা যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘‘গুলি চলবে। রাবার বুলেট চলবে।’’ পরের ভিডিয়োটিতেও প্রায় প্রথম ভিডিয়োটিরই বক্তব্য ঘুরে ফিরে এসেছে। সেখানে পর্দার ব্যক্তি বলছেন, ‘‘একটা-দুটো বডি যদি না পড়ে কিচ্ছু হবে না।’’
এরপরেই কুণাল জানিয়েছেন, বিভিন্ন সূত্র মারফত ভিডিওটি তাঁর কাছে এসেছে। ওই মিছিলে ইচ্ছাকৃত ভাবে অশান্তি তৈরি করার আগাম পরিকল্পনা করা হয়েছে। কুণাল এ-ও বলেন যে, নামে ছাত্রদের আন্দোলন হলেও ওই মিছিল মূলত নেপথ্যে থেকে চালনা করছে বিজেপি, এবিভিপি এবং আরএসএস। এমনকি নাম বদলে সিপিআইএমের কিছু গোষ্ঠীও থাকবে ওই মিছিলে বলে অভিযোগ কুণালের।
তৃণমূল ভবনে কুণালের ভিডিও প্রকাশ করার পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দুই বিজেপি নেতাকে আটক করে পুলিশ। ধৃতদের নাম বাবলু গঙ্গোপাধ্যায় এবং সৌমেন চট্টোপাধ্যায়। বাবলু ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত ঘাটাল থানার খড়ার পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একমাত্র বিজেপি কাউন্সিলর। তবে এখনও একজন পলাতক। তাঁর নাম বিপ্লব মাল। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। এক জন পলাতক। আটক হওয়া দুই বিজেপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে।’’
অন্যদিকে এভাবে তাদের দলকে বদনাম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, ‘‘তৃণমূল এবং পুলিশ এক হয়ে বিজেপিকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। আরজি কর নিয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা সকলেই দেখেছেন। আর এখন বিজেপির দু’জনকে আটক করা হল ঘাটালে।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন