প্রায় ৫ ঘণ্টা পর বিটি রোডে অবরোধ উঠলো। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার পর এবং সেই এফআইআরের কপি আন্দোলনকারীদের হাতে এসে পৌঁছানোর পর অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। অভিযুক্ত ট্র্যাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
আর জি কর ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে সিঁথি মোড় এলাকায় এক প্রতিবাদ কর্মসূচীর আয়োজন করেছিলেন রবীন্দ্র ভারতী ইউনিভার্সিটির বর্তমান পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা। রাত ১১টা থেকে শুরু হয় সেই কর্মসূচী। পথনাটিকার পাশাপাশি রাস্তার উপর বিভিন্ন গ্রাফিতি অঙ্কন, প্রতিবাদী স্লোগান লিখছিলেন তাঁরা। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ গোলমাল শুরু হয়।
পড়ুয়াদের অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় এক সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁদের আন্দোলনস্থল ঘিরে রাখা ব্যারিকেডে বাইক নিয়ে ধাক্কা মারেন। বাইকের উপর ইংরেজিতে পুলিশ লেখা ছিল। পড়ুয়ারা সিভিককে আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে তিনি পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে আপত্তিকর মন্তব্যও করেন বলে অভিযোগ।
এরপর এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট ঘটনাস্থলে আসেন। পড়ুয়াদের অভিযোগ, সার্জেন্ট ওই সিভিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে ছেড়ে দেন। পড়ুয়ারা জানান, সার্জেন্ট তাঁদের বলেন সিভিককে রাস্তা থেকে সরিয়ে এক ধারে নিয়ে গিয়ে কথা বলা হোক। সিভিককে রাস্তার এক ধারে নিয়ে যাওয়ার নাম করে সার্জেন্ট তাকে ছেড়ে দেন। এতে পড়ুয়াদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। তাঁদের অভিযোগ, ওই পুলিশও মত্ত অবস্থায় ছিলেন।
ওই সিভিককে ঘটনাস্থলে আনার দাবিতে অবরোধ শুরু করেন পড়ুয়ারা। ভোর চারটে থেকে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলে অবরোধ। এই সময়ের মধ্যে ওই পুলিশ অফিসারকেও ঘিরে রাখা হয়েছিল। সাড়ে আটটার সময় পড়ুয়ারা জানান, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার এবং সার্জেন্টের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। সেই কপি তাঁরা হাতে পেয়েছেন। সিভিক ভলান্টিয়ারকে কাশীপুর থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। অবরোধ তুলে নিচ্ছেন তাঁরা। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম গঙ্গাসাগর গোন্ড এবং ট্র্যাফিক সার্জেন্টের নাম তারকেশ্বর পুরি।
পাঁচ ঘণ্টা অবরোধের জেরে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। ডানলপ থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে বাস, বড় বড় মালবাহী লরি। অবরোধ তুলে নিলেও রাস্তার ধারে রবীন্দ্রভারতীর পড়ুয়াদের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে। তাঁদের বক্তব্য, কেন বারবার সিভিকদের বাঁচাতে পুরো সিস্টেমকে পথে নেমে যেতে হচ্ছে? সিভিকরা কেন প্রশাসনের কাছে এতো গুরুত্বপূর্ণ যে আমজনতার নিরাপত্তার বদলে সিভিকদের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশ বেশি জরুরী বলে মনে করছে?
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন