কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে এবারে প্রায় কয়েকশো পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হল। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার রায় দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আর সেই রায়েই ৮৪১৯ জন পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হল ধোঁয়াশা।
২০১৯ সালে শুরু হওয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে দুটি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, তার মধ্যে দ্বিতীয় মেধাতালিকাকে এদিন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, এই নিয়ে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালের নির্দেশকেও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের শুরু হওয়া পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। যার মধ্যে প্রথম তালিকা প্রকাশিত হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। এই তালিকা প্রকাশের পরেই কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখে নিয়োগ সংক্রান্ত ত্রুটি সংশোধন করে নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করার জন্য রিক্রুটমেন্ট বোর্ডকে নির্দেশ দেয় ট্রাইবুনাল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই মর্মে দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকা অনুযায়ীও নতুন করে চাকরি পান অনেকে।
কিন্তু দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশের পরেও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু অনিয়মের দাবি জানিয়ে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন কিছু চাকরিপ্রার্থী। মামলাকারীরা দাবি করে, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হওয়ায় গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াকেই বাতিল করতে হবে। তার সঙ্গে, সংরক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের জন্য নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে।
বুধবার সেই মামলায় রায় দিয়ে পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের দ্বিতীয় মেধাতালিকাকে বাতিল করে প্রথম মেধাতালিকাকেই মান্যতা দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন মামলাকারীদের হয়ে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম, অনিন্দ্য লাহিড়ী এবং দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় সওয়াল করলে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, “পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের প্রথম মেধাতালিকাই কার্যকর হবে। ২০২১ সালের ওই তালিকা পুনরুদ্ধার করে সেটা অনুযায়ীই নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।”
আদালতের এই রায়ের পর দ্বিতীয় মেধাতালিকার নিরিখে চাকরি পাওয়া ৮৪১৯ জন কনস্টেবলের মধ্যে কয়েকশো কনস্টেবল চাকরি খোয়াতে পারেন বলে অনুমান। তবে আদালত জানিয়েছে, খালি পড়ে থাকা শূন্যপদে আবার নতুন করে নিয়োগ করতে পারে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন