তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীর পাশাপাশি সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগে আঙুল উঠেছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে। এবার সেই মামলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্যদের আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। শুনানি শেষে সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা চাইল আদালত।
এছাড়াও, যাদের বিরুদ্ধে 'অস্বাভাবিক' সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর, দু'সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারীকে পাল্টা হলফনামা জমা দিতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৮ নভেম্বর।
মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে আদালতে এই জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছিলেন অরিজিৎ মজুমদার। মামলাকারীর অভিযোগ, ২০১৩ সালের পর থেকে হু হু করে বাড়তে থাকে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির পরিমাণ। বহু সরকারি সম্পত্তি বাজার মূল্যের থেকে অনেক কম টাকায় কেনা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই ২০১৩ সালেই এক ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে।
মামলাকারীর আরও অভিযোগ, মমতার ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধায় সম্প্রতি পুরসভা ভোটে দাঁড়ান। সেই হলফনামায় তিনি যে সম্পত্তির তথ্য দিয়েছিলেন তা ঠিক নয়। নিজের এবং স্বামীর সম্পত্তির পরিমাণ উল্লেখ করলেও ছেলের নামে কোনও সম্পত্তির উল্লেখ করেননি তিনি। ২০১৫, ২০১৭, ২০১৯ এবং ২০২০ চারটি সম্পত্তির ডিড নম্বর উল্লেখ করেননি নির্বাচনী হলফনামায় বলে অভিযোগ। আইনজীবী এও জানান, ত্রিনেত্র কনসালটেন্ট, লিপস অ্যান্ড বাউন্স প্রাইভেট লিমিটেড সহ একাধিক সংস্থা মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সাথে যুক্ত। সিবিআই, ইডি ও আয়কর দপ্তরের মাধ্যমে সম্পত্তি বৃদ্ধির তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মামলাকারী।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে সম্প্রতি ধর্মতলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের কর্মসূচিতে মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘শুনলাম, আমার নামে মামলা হয়েছে। আমি তো গত ১২ বছর ধরে এমপি হিসেবে যে পেনশন পাই, তা-ও নিই না। সাংসদ হওয়ার পরও কোনও দিন বিজনেস ক্লাসে যাত্রা করিনি। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আমার যে প্রাপ্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা, তা-ও নিই না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি যেখানে থাকি, সেটাও ঠিকায় ভাড়া। আমার নিজের বলতে কিছুই নেই। আমরা ভাই-বোনেরা সবাই আলাদা আলাদা থাকি। যে যার পরিবার নিয়ে। কখনও-সখনও দেখা হয়। উৎসবের মরসুমের সময় আমাদের যোগাযোগ হয়।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন