আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের দেওয়া পুজোর অনুদান ৮৫ হাজার টাকা প্রত্যাখান করেছে অনেক পুজো কমিটি। এই আবহে অনুদান সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলায় রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি বলেন, “৮৫ হাজার টাকায় কিছু হয়না। ওটা সম্ভবত ক্লাব সদস্যদের কাজে লাগতে পারে।“
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকারের তরফ থেকে পুজো কমিটিগুলোকে অনুদান দেওয়া শুরু হয়। প্রথমে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হলেও করোনার সময়কাল থেকে অনুদান দ্বিগুণ করেছিল রাজ্য সরকার। এরপর ২০২৩ সালে ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর দেওয়া হচ্ছে ৮৫ হাজার টাকা। আগামী বছর অনুদান ১ লক্ষ টাকা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
যা নিয়ে আপত্তি তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। সোমবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চে ছিল সেই মামলার শুনানি। শুনানিতে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘গত দু’বছর ধরে আমি পুজো প্যান্ডেলে যাচ্ছি। যা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে ৮৫ হাজার টাকায় কিছু হয় না। ওই টাকা সম্ভবত ক্লাবের সদস্যদের জন্য কাজে লাগতে পারে।“
শুনানিতে মামলাকারীর পক্ষে সওয়াল করছেন আইনজীবী শামিম আহমেদ। তিনি আদালতে জানান, রাজ্য সরকারের পুজোর অনুদান খাতে ২৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। শুনানি চলাকালীন এক মহিলা আইনজীবী, যিনি জিনঘটিত রোগ ‘মাস্কুলার ডিস্ট্রফি’ সংক্রান্ত একটি মামলা লড়ছেন, এজলাসে তাঁকে দেখে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনি অনেক দিন ধরে ওই মামলা লড়ছেন। রাজ্য ওই মামলায় প্রতি মাসে এক হাজার টাকা দেয় বলে জানিয়েছে। আমার মনে হয়, তার পিছনে আর একটা শূন্য দিলে ভাল হয়।’’
এরপরেই রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘রাজ্য ৮৫ হাজার টাকা দিতে পারলে ভুক্তভোগী মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত খরচ নিয়েও ভাবা উচিত। আর একটা শূন্য বসানো যায় কি না দেখুন। এখানে পূর্ত দফতরের কর্মীরা পর্যাপ্ত টাকা পান না। রাজ্যের সবার কথা ভাবা উচিত।“
পাশাপাশি, এদিন শুনানিতে রাজ্য সরকারের অনুদান খাতে খরচের ক্যাগ (CAG) রিপোর্টের হলফনামা চেয়েছে আদালত। উল্লেখ্য, রাজ্য কোন খাতে কত টাকা খরচ করেছে, কোথায় কোথায় খরচ হয়েছে, তা বিস্তারিত উল্লেখ করা থাকে সেই রিপোর্টে। এ বার সেই রিপোর্ট নিয়েই হলফনামা চাইল আদালত। পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যকে সেই হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন