রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র সংসদের নির্বাচন কেন করা যাচ্ছে না, তা জানতে চেয়ে এবার রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি কলেজের এক ছাত্রের করা মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজ্যকে এই হলফনামা জমা দিতে বলেছেন। আদালতের তরফে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ছাত্র সংসদের ভোট নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র ঋষভ সাহা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে মামলাকারী ওই ছাত্রের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী ঋতঙ্কর দাস। আদালতে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করার পক্ষে আবেদন করেন। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বহিরাগত ও প্রাক্তন পড়ুয়াদের দৌরাত্ম্য রোখার জন্যও আবেদন করেন আইনজীবী ঋতঙ্কর দাস। পরে তিনি জানান, “শেষবার রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়েছিল। তারপর ৬ বছর ধরে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি।”
ওই আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, “৩ বছর আগে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি ও ডায়মন্ড হারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই নির্বাচনে যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআই জয়ী হয়েছিল।” এছাড়াও রাজ্য সরকারের কাউন্সিল আইন নিয়ে ঋতঙ্কর দাস জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকারের কাউন্সিল আইনে বলা হয়েছে, ইউনিয়ন ইলেকশন নয় নমিনেশন হবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের সঙ্গে রাজ্য সরকারের এই মত মেলে না। তাই এই আইন বাতিলের জন্য আবেদন করা হয়েছে আদালতের কাছে।”
পাশাপাশি, যাদবপুর-সহ রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকেই বহিরাগত ও প্রাক্তনীদের বের করার জন্যও আবেদন করেছেন আইনজীবী ঋতঙ্কর দাস। তিনি আরও জানান, “ছাত্র সংসদের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আদালতের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছি। প্রয়োজনে আদালতের তরফে একটি প্যানেল তৈরির কথাও বলা হয়েছে যে প্যানেলের নজরদারিতে ভোট করা যেতে পারে।”
প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ২৮ আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে ছাত্র সংসদের নির্বাচন জানিয়েছিলেন, “পুজোর পরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে। আমরা যেমন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করি, আপনারাও তেমনই করবেন।”
তবে এই ভোট নিয়ে এসএফআই (SFI) -র বরাবরের অভিযোগ, গায়ের জোরে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিয়ে ভোট না করিয়ে তৃণমূল ছাত্র সংসদ দখল করে রেখেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন