রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসের হেরিটেজ ভবন ভাঙার কাজে গত ৭ নভেম্বর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে তৃণমূল পরিচালিত পার্টি অফিস অবিলম্বে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৯ ডিসেম্বর।
সোমবার উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। শুনানি শেষে আদালত রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে নির্মীয়মাণ অংশ ভাঙারও নির্দেশ দিয়েছে। এখানে হেরিটেজ ভবন ভেঙে পার্টি অফিস করছিল তৃণমূল। এই নির্দেশ কার্যকর করতে কলকাতা পুরসভাকে ৩ সপ্তাহ সময় দিয়েছে হাইকোর্ট।
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ভবন আগে যে অবস্থায় ছিল পুনরায় সেই অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব হেরিটেজ বিভাগের। পুনরুদ্ধারের পর সেই জায়গাটিকে আবার হেরিটেজ ভবন হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, হেরিটেজ ভবন না হলেও, যে কেউ গিয়ে যে কোনও জায়গায় পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলতে পারে?
প্রসঙ্গত, হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অব্যবহৃত ঘর ভেঙে পার্টি অফিস তৈরীর অভিযোগ ওঠে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন স্বদেশ মজুমদার নামের এক ব্যক্তি। আদালতের সওয়ালে মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী জানান, জোড়াসাঁকো ভবন ‘গ্রেড ওয়ান হেরিটেজ’। সেই ভবনেরই দু’টি ঘর ভেঙে ফেলা হচ্ছে!
শুধু তাই নয়, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির যে ঘরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল, সেখানে ‘শিক্ষাবন্ধু সমিতি’ নামে একটি দলীয় কার্যালয় চালু করেছে তৃণমূল। এমনকি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি খুলে সেই জায়গায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগানো হয়েছে বলেও অভিযোগ।
এই ঘটনার পর আদালত জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসের হেরিটেজ ভবন ভাঙার কাজে স্থগিতাদেশ জারি করে। পাশাপাশি আরও বলা হয়, হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও হেরিটেজ ভবন ভাঙার কাজ হলে জবাব দিতে হবে রাজ্যকে। রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থানে সমস্ত রকম নির্মাণকার্য বন্ধ রাখা ছাড়াও এই বিষয়ে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে বলেছিল হাইকোর্ট।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন