চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের। আদালতের পর্যবেক্ষণ, গোটা রাজ্য চুক্তিভিত্তিক কর্মী দিয়ে চলছে। ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা নিয়মিত নয়।
মার্চ মাসে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায় চুক্তির ভিত্তিতে আদালতের কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় রাজ্য। রাজ্য সরকারের সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ রাজ্য সরকারের ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ জারি করে।
সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম, বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রেখেছে। অর্থাৎ ওই নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ জারি থাকবে।
শুনানিতে রাজ্যের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “সর্বত্র কীভাবে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করা যেতে পারে? এমন জিনিস আমি আর কোথাও দেখিনি।” পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, “চুক্তিতে নিয়োগ হলে কর্মীরা দায়িত্বশীল হবেন কীভাবে? আদালতের কর্মী যদি চুক্তিভিত্তিক হন, তবে একটি ফাইল হারিয়ে গেলে তার দায় তিনি নেবেন কেন? তখন দায়িত্ব কে নেবেন?”
মঙ্গলবারের শুনানিতে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলে হাইকোর্ট। এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “যাঁরা ৩-৪ ঘণ্টার জন্য কাজ করেন, তাঁদেরকে না হয় চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করলেন। তা বলে সব কর্মী কীভাবে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হচ্ছে? আদালতের কাছে এটা বোধগম্য নয়। এখানে পুলিশও চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। সকাল থেকে কাজ করিয়ে ১৪ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার জন্যই কি নিয়োগ? দেশের কোথাও আমি এমন দেখিনি।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন