সন্দেশখালি কান্ডে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করাতে কোনো স্থগিতাদেশ নেই রাজ্য পুলিশের। তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে রাজ্য পুলিশ। সোমবার এমনটাই জানালেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
একই সঙ্গে সন্দেশখালি মামলায় শেখ শাহজাহানকে যুক্ত করল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি, এই মামলায় যুক্ত করা হল ইডি, সিবিআই ও রাজ্য পুলিশকে। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে নোটিস জারি করতে হবে বলে জানান প্রধান বিচারপতি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৪ মার্চ।
সোমবার এই সংক্রান্ত মামলায় প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘স্পষ্ট ভাবে বলছি, পুলিশকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। আমরা পুলিশকে বলিনি, যে গ্রেফতার করা যাবে না।’’
এর আগে শহজাহানের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, “এই নিয়ে কেউ কোনওরকম দ্বিমত, সংশয় রাখবেন না যে শেখ শাহজাহানকে তৃণমূল কংগ্রেস গার্ড করছে। শেখ শাহজাহানকে যদি কেউ গার্ড করে, জুডিশিয়ারি গার্ড করছে। জুডিশিয়ারি স্টে তুলে দিক, তারপর যদি না করতে পারে, তখন আমাকে এসে বলবেন।“
এর আগে গত শনিবার কলকাতা পুলিশের ডিজিও একই দাবি করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, আদালতের কারণেই পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারছে না। কারণ, ইডির সওয়ালের ভিত্তিতে আদালত রাজ্য পুলিশের এফআইআরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
সোমবার সন্দেশখালি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, "শেখ শাহজাহান তো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ তো তাঁকে ধরতে পারছেন না।" এর উত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, "যে আইনজীবীরা তাঁর হয়ে মামলা করছেন, তাঁরা বলতে পারবেন।"
অন্যদিকে, এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রসঙ্গও ওঠে শুনানিতে। আদালত বান্ধব জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় নাম না করে জানান, "একজন সাংসদ বলছেন, আদালতের নির্দেশের কারণে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না।" সেই সময় প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, শাহজাহানকে গ্রেফতারিতে কোনো স্থগিতাদেশ নেই।
অন্যদিকে, সোমবার শুনানি চলাকালীন সন্দেশখালির গ্রামবাসীদের তোলা একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের পক্ষ থেকে আদালত থেকে জানানো হয়, শেষ চার বছরে ৪৩ টি FIR জমা পড়েছে, যার মধ্যে ৪২ টিতে চার্জশিট হয়েছে। ধর্ষণের ধারাও যুক্ত হয়েছে, বাকি তদন্ত চলছে। ৮ ফেব্রুয়ারী থেকে এখনও পর্যন্ত ২৪ টি FIR, ২২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই শুনে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, "৪২ টি মামলার চার্জশিট জমা দিতে চার বছর সময় লাগল! পরে আমরা চার্জশিটও খতিয়ে দেখব। ৪ বছর ধরে এই ঘটনা ঘটছিল, কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।" প্রধান বিচারপতির কড়া নির্দেশ, সরাসরি সাজা দিতে হবে। আগামী ৪ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন