বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী কে কে-এর মৃত্যুকে ঘিরে রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ, তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে এই মামলায় হলফনামা জমা দিতে হবে।
কলকাতার নজরুল মঞ্চের আয়োজকদের গাফিলতি, বিশৃঙ্খলা, শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের বেনিয়মকে কাঠগড়ায় তোলেন কেকে-র অনুরাগীরা। কে কে-র মৃত্যু নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার তিনটি মামলার শুনানি হয়। সেদিন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় আদালতে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, কলকাতার নজরুল মঞ্চে গুরুদাস কলেজের বার্ষিক ফেস্টের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে আসন সংখ্যা ছিল ২,৪০০, সেখানে দর্শক হয়েছিল ৭,৫০০। নজরুল মঞ্চের নিরাপত্তারক্ষী নিজেই জানিয়েছিলেন, পাঁচিল টপকে, গেট ভেঙে বহু ছেলেমেয়ে ভিতরে ঢুকেছিল। এত ভীড় সামাল দেওয়া যায়নি।
পাশাপাশি তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠান বাবদ খরচ হয়েছিল ৩০ লক্ষ টাকা। এর জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হয়েছিল। সেই টাকার হিসেব কোথায়? কে কে-এর মৃত্যুকে ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের মনে। যে কারণে, আইনজীবী সব্যসাচী চ্যাটার্জী এই মামলার তদন্ত ইডিকে দিয়ে করানোর দাবি জানিয়েছেন আদালতে।
অন্যদিকে, কেকে-এর মৃত্যু ঘিরে অন্য একটি মামলায় আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, নজরুল মঞ্চে সেদিন অতিরিক্ত ভীড় ছিল। হলের এসি কাজ করছিল না। পুরো ঘটনার জন্য উদ্যোক্তাদের গাফিলতি দায়ী।
এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানিয়েছেন, কে কে-এর মৃত্যুর ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু কেকে-র পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কিছুটা সময় দেওয়া হোক। রাজ্য তার বক্তব্য পেশ করবে। কিন্তু এজি এই জনস্বার্থ মামলাগুলির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সঙ্গীতশিল্পী কে কে-এর মৃত্যুকে ঘিরে ইতিমধ্যেই বহু তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। বহু রাজনৈতিক চাপানউতোরেরও সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩১ মে কলকাতার নজরুল মঞ্চে এক কলেজ ফেস্টে গান গাইতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কে কে। এরপর হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। হোটেলে অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিএমআরআইতে। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন