প্রায় সাড়ে ৩৪ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার গভীর রাতে অবস্থান প্রত্যাহার করলেও ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে অনড় পড়ুয়ারা। অবিলম্বে দাবি না মানলে, দুপুর ২টো থেকে আমরণ অনশনে বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। আন্দোলন প্রত্যাহার করার সময় ছাত্রদের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে - "আমাদের "সম্মানীয়" অথোরিটিকে যথাযোগ্য সম্মানের সাথে আমরা জানিয়ে এসেছি, তাঁরা চাইলেই প্রিন্সিপাল রুম থেকে চলে যেতে পারেন, তাঁদের আর বাধা দেওয়া হবে না। আন্দোলনের জেনারেল বডি মিটিংয়ের মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এই কলেজ অথোরিটি যারা তাঁদের নিজেদের নোটিশ অনুযায়ী ২২ তারিখ ভোট করানোর সিদ্ধান্তকে "হায়ার অথোরিটির" অদৃশ্য আদেশে পূরণ করতে পারেননা, যে অথোরিটি শিক্ষকদের একাংশের দ্বারা তাদের ছাত্রদের উপর নেমে আসা শারিরীক নিগ্রহ, ধমকি ও খুনের হুমকির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননা, যে অথোরিটি জানাতে পারেননা ঠিক কার নির্দেশে সেন্ট্রাল ল্যাব চার ঘন্টা বন্ধ থাকে, যার সাথে এই আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই; কোনোরকম আলোচনার পথেই এর সমাধান তাঁরা করতে চাননা।"
পড়ুয়াদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে - "সেই কথা মাথায় রেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই ঘেরাও আমরা তুলে নিচ্ছি কিন্তু আমাদের আন্দোলনের এখানেই শেষ নয়। আমরা অথোরিটিকে আগামীকাল অর্থাৎ ৭/১২/২২ এর দুপুর ২টো অবধি সময় দিচ্ছি যদি তারা পূর্বনির্ধারিত ২২শে ডিসেম্বরের ভোটের SOP না দিতে পারেন, আমরা বৃহত্তর আন্দোলন তথা আমরণ অনশনের পথে অগ্রসর হবো। আমরা এই মুহূর্তেও মেডিকেল কলেজ অথোরিটির দিকে তাকিয়ে আছি। যাতে তারা সুস্থ ভাবে ইলেকশানের নির্ঘন্ট প্রকাশ করে নিজেদের নোটিশ কার্যকর করেন। তা নাহলে এই অনশনের ফলে যদি কোন ছাত্রের শারিরীক অবস্থার অবনতি হয় তার সম্পূর্ণ দায় এই কলেজ অথোরিটির।"
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর থেকেই কলেজের বিভিন্ন অধ্যক্ষ সহ বিভাগীয় প্রধানদের আটক করে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার বিকেলে নার্সিং সুপার এবং ৩ জন শিক্ষিকাকে ছেড়ে দিলেও বাকিদের প্রশাসনিক ব্লকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই ব্লকের গেট খুলে দেওয়া হয়। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ-সহ বিভাগীয় প্রধানকে ছেড়ে দেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, বুধবার সকাল থেকেই বিভাগীয় প্রধানরা পুনরায় রোগী দেখা শুরু করেছেন। তবে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, আন্দোলনকারীরা আমরণ অনশনে বসলে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে কলেজের উপাধ্যক্ষের দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। গণতান্ত্রিক অধিকার সবার আছে। তাই আন্দোলনে সরব হয়েছে পড়ুয়ারা। একটা নির্বাচন করতে অনেক টাকা খরচ হয়। সেই খরচের জোগান কে দেবে? প্রশাসন ছাড়া সেই টাকা দেওয়ার অধিকারও কারোর নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন