উধাও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর বাংলা বিভাগের শতাধিক উত্তরপত্র। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে সেই সব পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ। অন্যদিকে, উত্তরপত্র হারানোর বিষয় নিয়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, অন্তত ১২০ জন পড়ুয়ার উত্তর পত্র হারিয়ে গিয়েছে। যাঁদের উত্তর পত্র হারিয়েছে, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই দক্ষিণ ২৪ পরগণা কলেজের পড়ুয়া। এর মধ্যে কলকাতার দু’টি কলেজের পড়ুয়াও রয়েছেন এই তালিকায় বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত মোট ১৯ টি কলেজে পড়ানো হয় স্নাতকোত্তর।
তবে উত্তরপত্র হারিয়ে যাওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই ঘটনা ঘটেছে পরীক্ষকদের গাফিলতির কারণে। উত্তরপত্র নিয়ে এতটা গা-ছাড়া মনোভাব দেখানো উচিত হয়নি। এতে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়ে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে সিন্ডিকেটে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, পড়ুয়াদের দু’টি বিকল্প দেওয়া হবে। যার মধ্যে প্রথম বিকল্প হল – ওই পড়ুয়ারা যদি চান, তাহলে আবার পরীক্ষায় বসতে পারেন। দ্বিতীয় বিকল্প – যারা পরীক্ষায় বসতে চান না, তাঁদের প্রথম সেমিস্টারের যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি নম্বর রয়েছে, তা সেই হারিয়ে যাওয়া খাতার নম্বর হিসাবে গণ্য হবে। যদিও এই সিদ্ধান্তে উপাচার্যের অনুমোদন মেলেনি।
অন্যদিকে, উত্তরপত্র হারিয়ে যাওয়া নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাদের মতে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নিয়োগ করা অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত। তাঁর ছাত্রছাত্রীদের কথা ভাবার সময় নেই। এই খাতা হারানোর নেপথ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড়ো গাফিলতি রয়েছে। কলেজ খুললেই আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।
এই বিষয়ে এসএফআই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক মাল্যবান গাঙ্গুলি পিপলস রিপোর্টারকে জানান, "খাতা হারিয়েছে কলেজ থেকে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কলেজের যারা এই গাফিলতির সঙ্গে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার আবেদন জানানো হবে। সবথেকে বড়ো প্রশ্ন, সিন্ডিকেট বৈঠকের কথা বাইরে যাবার কথা নয়। সেই কথা কারা বাইরে ফাঁস করলো।"
তিনি আরও বলেন, "অতীতে কখনও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই ধরণের গাফিলতির কোনও অভিযোগ ওঠেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অন্যান্য সংগঠনের পক্ষ থেকে যেভাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে কালিমালিপ্ত করার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে আমরা তার সঙ্গে সহমত নই।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন