ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য সমূহ বিপদ ডেকে আনছে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ক্যাশলেস লেনদেন, বুধবার বাণিজ্য সম্মেলনের শেষের ভাষণে এইভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নগদহীন লেনদেনের মাধ্যমে অর্থনীতির কোনও উন্নয়ন ঘটে না বলেই জানিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর সাফ বক্তব্য, “ক্যাশলেস ট্রান্সজাকশন বড়লোকদের জন্য। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের জন্য এটি বিভিন্ন বাধা তৈরি করছে।” একইসঙ্গে, এবছরের বাণিজ্য সম্মেলন থেকে রাজ্য সরকারের কাছে ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলেও জানিয়েছেন মমতা।
বুধবার শেষ হয় রাজ্যের দুইদিন ব্যাপী বাণিজ্য সম্মেলন। সেই সম্মেলন শেষের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নগদহীন লেনদেন নিয়ে নাম না করে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি জানান, “ক্যাশলেস ট্রান্সজাকশন বড়লোকদের জন্য ঠিক আছে। ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু অর্থনীতির দিক দিয়ে তুলনামূলক নিম্নবিত্তদের মধ্যে কতজন এই ধরণের কার্ড ব্যবহার করেন? আমি নিজেই তো এধরণের কোনও কার্ড ব্যবহার করিনা।”
একইভাবে, ক্যাশলেশ ট্রান্সজাকশনের দিকে বেশি নজর দিতে গিয়ে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মমতা। এদিকে বড় শিল্পের চেয়ে কুটির শিল্পের দিকেই রাজ্য সরকারের বেশি মনোযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে তিনি। মমতার বক্তব্য, “ছোট শিল্প সবসময়ই সুন্দর। বড় শিল্পগুলি সবসময় কর্মসংস্থান তৈরি করে না। কিন্তু ক্ষুদ্র শিল্প কর্মসংস্থান তৈরিতে সবসময়ই এগিয়ে থেকেছে।” শিল্পপতিরা কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে দেশ ছাড়ছেন বলেও এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোর ভয়ে শিল্পপতিরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। আরও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, শিল্পপতিদের টুটি টিপে ধরছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো। একইভাবে, আকাশছোঁয়া করও একটা সময় তাঁদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
বুধবার ৭তম বাণিজ্য সম্মেলনের শেষে তিনি জানিয়েছেন, এই বছরের বাণিজ্য সম্মেলন ১৮৮টি মৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। পাশাপাশি ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাবও পেয়েছে রাজ্য।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন