পশ্চিমবঙ্গের জেলা স্তরে জাল জাতিগত শংসাপত্র জারি হওয়ার অভিযোগ ওঠার পরেই রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ ব্যবস্থাকে কঠোর করার উদ্দেশ্যে কিছু পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে, এখন থেকে জাতিগত শংসাপত্র শুধুমাত্র জেলাশাসক স্তর থেকেই দেওয়া হবে। এর আগে মহকুমা আধিকারিক স্তরে এই শংসাপত্র পাওয়া যেত। নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে তা আর পাওয়া যাবে না।
এই বিষয়ে ঘন ঘন অভিযোগ ওঠার পর রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে যে মহকুমা আধিকারিক স্তর থেকে এমন বহু ব্যক্তি এই শংসাপত্র পেয়েছেন যাদের পদবী তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির তালিকায় নেই।
রাজ্য সরকারের সূত্র অনুসারে, রাজ্য সচিবালয় থেকে এইসব ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাদের পদবী তফসিলি পদের তালিকায় না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা এই জাতীয় জাতিগত শংসাপত্র পেয়েছেন, অবিলম্বে প্রতিটি ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে এবং কোনওরকম অনিয়ম হলে সেই শংসাপত্র বাতিল করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থার জন্য সম্প্রতি সমাপ্ত ভোটের আগে বহু জেলা থেকেই জাল জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার সর্বাধিক অভিযোগ সামনে এসেছিল।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এটিকে প্রধান ইস্যু করে তুলেছিলেন এবং জাল জাতিগত শংসাপত্র প্রদানের বিষয়টি নিয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এই ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ইতমধ্যেই তিনজন আমলাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে এক রাজ্য সরকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, জাতিগত শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও যাদের নাম নির্ধারিত পদবী তালিকায় নেই তাদের পক্ষে যুক্তি দেওয়ার জন্য সুযোগ না দিয়ে একতরফাভাবে কোনও শংসাপত্র বাতিল করা হবে না।
রাজ্য সচিবালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এক প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এই ধরনের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এসে তাঁর পক্ষে যুক্তি ও প্রমাণ দেবার জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির যুক্ত সন্তোষজনক হলে তবেই তাঁকে জাতিগত শংসাপত্র রাখার অনুমতি দেওয়া হবে। যদি ওই ব্যক্তির উত্তর সন্তোষজনক না হয়, সেক্ষেত্রে তাদের শংসাপত্র বাতিল বলে ঘোষণা করা হবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন