শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ফের আদালতের রোষের মুখে পড়ল সিবিআই। এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য সংক্রান্ত জোড়া মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিলেন উচ্চ আদালতের বিচারপতিরা। দুই মামলারই মূল বিষয়বস্তু নিয়োগ দুর্নীতি।
বুধবার, কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির পৃথক এজলাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন সিবিআই-র উদ্দেশ্যে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করছে তারা? উত্তরে সিবিআই আধিকারিকরা জানান, নবম-দশমে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হেফাজতে রয়েছেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য।
পাশাপাশি, এসএসসি গ্রুপ 'সি' মামলায় প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেছে নিম্ন আদালত। আগামী ২২ ডিসেম্বর সেই মামলার শুনানি হবে। আদালতে সিবিআই জানায়, আগামী বৃহস্পতিবার সুবীরেশকে নিম্ন আদালতে পেশ করবে জেল কর্তৃপক্ষ।একথা শুনে সিবিআই-র বিশেষ আদালতের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, জেল থেকে আদালতের দূরত্ব ২ কিলোমিটারেরও কম। তাহলে এত সময় লাগবে কেন? সুবীরেশকে কি তিহার জেল থেকে আনা হবে?
ক্ষুব্ধ বিচারপতি সিবিআই-কে আরও জানান, যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা ন্যায়বিচারের আশায়, চাকরির দাবিতে পথে বসে আছেন। এদিকে একজন অভিযুক্তকে পেশ করতে ১০ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে! বিশেষ আদালতের বিচারককে বলবেন, আমি তাঁর কাজে সন্তুষ্ট নই। মঙ্গলবারের মধ্যেই এই সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি, নিম্ন আদালতে দ্রুত শুনানির জন্য সিবিআই-কে আবেদন পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
অন্যদিকে, বুধবার উচ্চ আদালতে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেখানেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ। সিবিআই-কে তাঁরা জিজ্ঞেস করেন, সব কাজ তো সিঙ্গল বেঞ্চ করছে, আপনারা কী করছেন?
শুনানি চলাকালীন সুবীরেশ ভট্টাচার্যের আইনজীবী আদালতে বলেন, ৮৮ দিন ধরে জেলে রয়েছেন তাঁর মক্কেল। ৫ বার সিবিআইয়ের সামনে হাজিরা দিয়েছেন। FIR এ তাঁর নাম ছিল না। তবুও তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করেছেন তিনি। চার্জশিটও দাখিল হয়ে গেছে।
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ ৭ বছর। তদন্তে দেরি হচ্ছে এই অভিযোগ থাকলে সাড়ে ৩ বছর পরে আসুন। উত্তরে সিবিআই-র আইনজীবী জানান, আদালতের নির্দেশ মেনেই সিবিআই তদন্ত করছে। এরপর আদালত সিবিআই-র কাছে তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে জানতে চায়। আগামী ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট সিবিআই-কে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন