শিশুদের কাছে এবার তার মায়ের কোলও নিরাপদ নয়। কারণ পানিহাটি, নরেন্দ্রপুরের পর এবার খাস কলকাতার আনন্দপুর এলাকায় ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ২১ দিনের শিশুকন্যাকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মায়ের বিরুদ্ধে। সোমবার এই ঘটনায় শিশুর মা-সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘটনা নিয়ে জোর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পরপর শিশু বিক্রির ঘটনায় চক্রের ইঙ্গিত পাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
সোমবার আনন্দপুর এলাকার নোনাডাঙা রেল কলোনির বাসিন্দা রূপালি মণ্ডলের বিরুদ্ধে শিশু বিক্রির অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সূত্রে খবর, তিন সন্তানকে নিয়ে একাই থাকতেন রূপালি। কয়েকদিন ধরে তার ২১ দিনের সদ্যোজাত শিশুকে দেখতে না পেয়ে প্রতিবেশীরা আনন্দপুর থানায় অভিযোগ জানায়। তারপর ওই মহিলাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কোনও উত্তর না পেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি জেরায় কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশু বিক্রির কথা স্বীকার করেন তিনি।
জেরায় রূপালির দেওয়া সূত্র ধরেই পাটুলি এলাকা থেকে রূপা দাস ও স্বপ্না সর্দার নামের দুই মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাদের জেরা করে হরিদেবপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় লালতি দে ও পূর্ণিমা কুণ্ডু নামের আরও দুই মহিলাকে। তারপর তাদের জেরা করে বেহালা পর্ণশ্রী এলাকার বাসিন্দা কল্যাণী গুহর খোঁজ পায় পুলিশ। তার কাছে থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ২১ দিনের সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে। শিশুটিকে বর্তমানে একটি হোমে রাখা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে নিঃসন্তান ছিলেন কল্যাণী।
এই ৬ জনকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত। পুলিশ এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু করেছে। এর আগে, সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসেই উত্তর ২৪ পরগণার পানিহাটি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার নরেন্দ্রপুরেও শিশু বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। নরেন্দ্রপুরে দু’লক্ষ টাকার বিনিময়ে সন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল মায়ের বিরুদ্ধে। পানিহাটিতে আইফোন ১৪ কেনার জন্য আট মাসের শিশুপুত্রকে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছিল এক দম্পতির বিরুদ্ধে। তার আগে এপ্রিল মাসে নরেন্দ্রপুরে আরও এক শিশু বিক্রির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। রাজ্যে ফের শিশু বিক্রি চক্রের সক্রিয়তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পুলিশের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন