আইকোর কান্ডে হাজিরা এড়ালেন রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী এবং তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন তাঁকে আইকোর চিটফান্ড দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলো সিবিআই। তাঁর পক্ষে সিবিআই অফিসে যাওয়া সম্ভব নয় জানাতে এদিন সিবিআই আধিকারিকরা তাঁর অফিসে হাজির হন।
সোমবার বেলা ১১টায় তাঁকে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিলো। যদিও সেখানে না যাওয়ায় এদিন সিবিআই আধিকারিকরা হাজির হন ক্যামাক স্ট্রীটের শিল্পভবনে। জানা গেছে সেখানেই জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হতে পারে।
সিবিআই-কে লেখা এক চিঠিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তিনি একজন সিনিয়র সিটিজেন এবং বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছেন। তাই তাঁর পক্ষে সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব নয়। যদিও তিনি জানিয়েছেন, সিবিআই আধিকারিকরা চাইলে তাঁকে তাঁর ঘরে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। সেক্ষেত্রে তিনি সবরকমের সহযোগিতা করবেন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর সিবিআই-এর পক্ষ থেকে চিঠি পাঠিয়ে আই কোর কান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠানো হয়।
সিবিআই সূত্র অনুসারে, তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আই কোর গ্রুপের সরাসরি সম্পর্ক ছিলো এবং সেই কারণেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সূত্র অনুসারে, তদন্তকারী অফিসাররা একটি ভিডিও ক্লিপ পেয়েছেন, যেখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আইকোর প্রধান অনুকূল মাইতির সঙ্গে কোনো এক অনুষ্ঠানে একই স্টেজে দেখা গেছে। যেখানে তিনি আইকোরের পক্ষে কথা বক্তব্য রাখছেন।
এক সিবিআই অফিসারের বক্তব্য অনুসারে, যে তারিখে এই ভিডিও তোলা হয়েছে সেই সময় আইকোরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ ছিলো। তাই আইকোরের অনুষ্ঠানে কেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গেলেন এবং আইকোরের পক্ষে কথা বললেন, যা সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে তা জানা জরুরি। আমরা ওনার কাছ থেকে এই বিষয়ে বিশদে জানতে চাই।
যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবারই প্রথম হাজিরা এড়ালেন এমন নয়। এর আগেও বহুবার সিবিআই, ইডি তাঁকে নোটিশ পাঠালেও তিনি নির্বাচন অথবা রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা জানিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে গেছেন।
এই বছরের এপ্রিল মাসে ইডি তাঁকে নোটিশ পাঠিয়েছিল। যদিও তিনি সেইসময়েও নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত আছেন বলে জানিয়ে হাজিরা এড়িয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে আইকোর চিটফান্ড দুর্নীতির কথা সামনে আসে। যেসময় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আইকোর গ্রুপের প্রধান অনুকূল মাইতিকে বেআইনি ভাবে প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা তোলার জন্য গ্রেপ্তার করে। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে তাঁকে ভুবনেশ্বরের ঝাড়পদা স্পেশাল জেলে রাখা হয়। ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন