স্কুল থেকে কলেজ - সর্বত্রই নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূলের দাবি - এই দুর্নীতির সঙ্গে দল বা সরকারের কোনও যোগাযোগ নেই। তবে, রবিবার সেই দাবি উড়িয়ে কলেজ চাকরীপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, সবকিছুই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অবগত।
২০১৮ সিএসসি এম্পানেল্ড ক্যান্ডিডেটস অর্গানাইজেশন (2018 CSC ECO)-এর সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি মণ্ডল দাবি করেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে আমরা চিঠি দিয়ে কলেজ সার্ভিস কমিশনে দুর্নীতির বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছিলাম। কিন্তু, তিনি কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।' সঙ্গে তিনি জানান, 'কোনকিছু না হওয়ায়, এবার আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দেবো।'
একইসঙ্গে এদিন প্রেস রিলিজে সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, 'পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) বা প্রাইমারি টেট (Primary TET)-এ যে দুর্নীতি হয়েছে, তার সঙ্গে কলেজ সার্ভিস কমিশন (College Service Commission)-এ দুর্নীতির বিষয়টি আলাদা নয়।' তাঁদের যুক্তি, 'প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুধুমাত্র স্কুল শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন না, তিনি একাধারে উচ্চ-শিক্ষামন্ত্রীও (Higher Education Minister) ছিলেন।'
২২শে জুলাই ইডি (ED)-র তল্লাশিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ২১ কোটির বেশি নগদ টাকা উদ্ধার হয়। গেপ্তার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
এ নিয়ে চাকরীপ্রার্থীরা দাবি করেন, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠের ফ্ল্যাট থেকে যে বিপুল পরিমান খামবন্দী টাকা উদ্ধার হয়েছে, তাতে উচ্চ-শিক্ষা দফতরের (Higher Education Department) নাম স্পষ্ট এবং জ্বলজ্বল করছে। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষা দপ্তর ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে সংঘটিত দুর্নীতির টাকা, উদ্ধারকৃত অর্থের সঙ্গে রয়েছে...।'
প্রেস রিলিজে সংগঠনের কার্যকারী সভাপতি ড. ক্ষুদিরাম চক্রবর্তী দাবি করেন, '২০১৮ সালের কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা প্রমাণিত। এর দায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। একইসঙ্গে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত CSC-র চেয়ারম্যান দীপক কর (Dipak Kar)সহ উচ্চশিক্ষা দফতর এবং কলেজ সার্ভিস কমিশনের বিভিন্ন আধিকারিক, বোর্ড মেম্বার, CSC ইন্টারভিউ বোর্ডের কিছু সদস্য।'
ক্ষুদিরাম বাবু জানান, 'মনে রাখতে হবে, কয়েকশো কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনে। টাকার বিনিময়ে মেধা তালিকা বহির্ভূত নিয়োগ, নেতা-মন্ত্রীর আত্মীয়-পরিজন চাকরী দেওয়া হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে বাংলার মেধাবী, যোগ্য যুব-সমাজকে।'
একইসঙ্গে তিনি বলেন,'বিগত দুই বছরে, ২০১৮ সালের অধ্যাপক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে একাধিক মামলায় কমিশনের গাফিলতি প্রমাণ হয়েছে। সিঙ্গেল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চ- উভয় ক্ষেত্রেই দুর্নীতির মামলার রায় CSC-র বিরুদ্ধে গিয়েছে।'
এদিনও, কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির সিবিআই (CBI) তদন্তের দাবি জানিয়েছে চকারী প্রার্থীদের সংগঠন ২০১৮ সিএসসি এম্পানেল্ড ক্যান্ডিডেটস অর্গানাইজেশন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন