শিক্ষার পর এবার স্বাস্থ্য। স্কুল সার্ভিস এবং কলেজ সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দুর্নীতির পর রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের ১১,৫২১ পদে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন জনৈক পীযূষ পাত্র নামের এক ব্যক্তি।
মামলাকারী আদালতে জানিয়েছেন যে, স্বাস্থ্য দফতরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য জেলাভিত্তিক নির্বাচন কমিটি তৈরী হয়েছিল। সেই নির্বাচন কমিটির প্রায় সব সদস্যরাই শাসকদল তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী। ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর, ১১ হাজার ৫২১টি শুন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল রাজ্য সরকার। নিয়োগের জন্য জেলাভিত্তিক ২৮টি নির্বাচন কমিটি তৈরী করা হয়েছিল। এই কমিটি ঘিরেই দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মামলাকারী।
মঙ্গলবার, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। আদালত রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে কাছে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত আদালতে জানিয়েছেন যে, "এই নিয়োগের জন্য জেলাস্তরে ২৮ জনের একটি নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারি আধিকারিকের পরিবর্তে ওই কমিটিতে রয়েছেন শুধু শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা। স্বজনপোষণ বা দুর্নীতি করার জন্যই কি এই পদক্ষেপ করা হয়েছে?"
পাশাপাশি তাঁরা আরও জানিয়েছেন, গত বছর নভেম্বরে রাজ্য সরকারের তরফে নির্বাচন কমিটি প্রসঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সেই নির্বাচন কমিটিতে আছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, গৌতম দেব, চন্দ্রনাথ সিংহ, শান্তা ছেত্রী, মলয় ঘটক, অখিল গিরি, শেখ সুফিয়ানের মত শাসক দলের হেভিওয়েট নেতারা। যার জেরে ফের কাঠগড়ায় উঠছে শাসকদল তৃণমূলের ভূমিকা।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। স্বাস্থ্য দপ্তরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সে সময় হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন