শিক্ষার পর এবার স্বাস্থ্য। মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠল স্বাস্থ্য দপ্তরের বিরুদ্ধে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তৈরি হল ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
শিক্ষা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সব ক্ষত্রেই দুর্নীতিতে জর্জরিত রাজ্য সরকার। এতদিন জনসাধারণের সামনে এসেছিল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির কথা। কিন্তু এবার মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মামলা হল হাইকোর্টে। সেই মামলার রায়ে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি শম্পা দত্তের বেঞ্চ বলে, এই নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে। যা উচিত নয়। কিছু জনকে বেছে বেছে চাকরি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়মবহির্ভূত ও অসাংবিধানিক। তাই সত্য খুঁজে বার করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
পাশাপাশি বুধবার হাইকোর্ট অভিযোগ পর্যবেক্ষণের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। যার নেতৃত্বে থাকবেন হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জয়ন্ত কুমার বিশ্বাস। এছাড়াও থাকবেন রাজ্যের হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সচিব নরেন্দ্রনাথ দত্ত ও আইনজীবী অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই রিপোর্টের ওপর নির্ভর করবে চাকরিরত ব্যক্তিদের ভাগ্য, নির্দেশে স্পষ্ট করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
মামলাকারীর দাবি, ২০১৮ সালে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনে ৭২৫ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওয়েস্টবেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। সেই মতো ২০১৯ সালে নথি যাচাই এবং ইন্টারভিউ হয়। কিন্তু তিনি দেখেন তাঁকে ১২ নম্বর দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি MSc পাশ করলেও মেডিক্যাল টেকনোলজিতে তাঁর ১ বছরের ডিপ্লোমা ডিগ্রি রয়েছে মাত্র। অথচ কিছু BSc পাশ প্রার্থীকে ল্যাব টেকনোলজির যোগ্যতা দেখিয়ে ১৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।
নম্বরের এমন গরমিল দেখে প্রথমে তিনি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল বা স্যাট-এ মামলা দায়ের করেন। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই মামলা খারিজ করে দেয় স্যাট। তারপরেই তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই দুর্নীতির অভিযোগের কারণে দমকল ফায়ার অপারেটর পদে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। দমকলের প্রায় ১৫০০ শূন্যপদে নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। এক্ষেত্রেও প্রথমে SAT-এর কাছে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু SAT সেই অভিযোগ খারিজ করে দেওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, সংরক্ষণ সংক্রান্ত শংসাপত্রকে মান্যতা না দিয়েই মেধাতালিকা প্রকাশ করে নিয়োগ করা হয়েছে। এমনকী, সাধারণ চাকরিপ্রার্থীকে তফসিলি কোটায় চাকরি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন