সিঙ্গুরে শিল্প স্থাপন না হওয়ার কারণে টাটা মোটরসকে ক্ষতিপূরণ দেবে তৃণমূল সরকার। ৭৬৬ কোটি টাকা দিতে হবে রাজ্য কোষাগার থেকেই। সোমবার আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল এই নির্দেশ দিয়েছে। যা নিয়ে মমতা ব্যানার্জিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং সিপিআইএম সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য।
১৫ বছর পরে ফের খবরের শিরোনামে সিঙ্গুরের টাটার ন্যানো গাড়ি তৈরির কারখানা। তৎকালীন বাম সরকারের আমলে টাটার কারখানা করতে বাধা দিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। এখন সেই মমতা ব্যানার্জির সরকারকেই কারখানা না হওয়ার খেসারত দিতে হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম বলেন, "বাংলার ভবিষ্যতকে নষ্ট করেছে এই মমতা ব্যানার্জি। বেকার যুবক যুবতীদের স্বপ্নকে নষ্ট করে তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টাটা কারখানা উপহার দিয়েছিলেন। দেরিতে হলেও তার দাম দিতে হচ্ছে রাজ্যবাসীকে"।
সিপিআইএম সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যর গলাতেও একই সুর শোনা গেলো। তিনি বলেন, "রাজ্য সরকার দেউলিয়া হয়ে গেলো। মমতা ব্যানার্জি ক্ষমতায় আসার জন্য যত অপকর্ম করেছেন সেই অপকর্মের দগদগে ক্ষত এখন আসতে আসতে বেরোচ্ছে। কোথা থেকে দেবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা? এরা যদি টাকা আদায়ের জন্য ডিক্রি জারি করে দখল নেয় তাহলে পশ্চিমবঙ্গে যা সম্পদ আছে সব তো চলে যাবে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ভিক্ষাপাত্র হাতে নিয়ে দাঁড় করিয়ে দিল মমতা ব্যানার্জির সরকার"।
প্রসঙ্গত, সোমবার ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে এক বিবৃতিতে টাটা গোষ্ঠী জানায়, তিন সদস্যের আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল অবশেষে পশ্চিমবাংলার সিঙ্গুরে অটোমোবাইল কারখানা মামলার নিষ্পত্তি করেছে। ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্য সর্বসম্মতিক্রমে টাটা মোটরসকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা দেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষ পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমকে (WBIDC) নির্দেশ দিয়েছে।
শুধু এই টাকাই নয় মামলার খরচ বাবদ টাকা গোষ্ঠীকে আরও ১ কোটি টাকা দেবে রাজ্য। পাশাপাশি ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে রাজ্যকে। সুদের হিসাব ধরলে টাকার পরিমাণ ১০০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। তবে এখন দেখার রাজ্য এই নির্দেশ মেনে টাটা মোটরসকে ক্ষতিপূরণ দেয় নাকি এই নির্দেশকে চ্যালঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন