অধ্যাপক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্ত এবং বঞ্চিত প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের দাবিতে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থানে বসতে চেয়েছিলেন কলেজ সার্ভিস কমিশনের চাকরীপ্রার্থীরা। কলকাতা পুলিশকে চিঠি দিয়ে জানিয়েও ছিলেন তাঁরা। কিন্তু, তারপরেও তাঁদের অবস্থানে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এমনই অভিযোগ চাকরীপ্রার্থীদের।
এর আগে একাধিকবার প্রতিবাদ সভা, মিছিল, পথ অবরোধ, মুখ্যমন্ত্রী-শিক্ষামন্ত্রীকে ডেপুটেশন দিয়েছে ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনের বঞ্চিত মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীরা। তা সত্ত্বেও সরকার তাঁদের নিয়ে নির্বিকার বলে অভিযোগ।
আদালতে আইনিভাবেও তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, সবদিক থেকে চাকরী প্রার্থীদের আন্দোলনকে বানচাল করতে মরিয়া হয়ে উঠছে রাজ্য প্রশাসন।
এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের মতো সিএসসি-র চাকরী প্রার্থীদের অভিযোগ, প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অযোগ্য ও কম যোগ্য প্রার্থীদের অর্থের বিনিময়ে বা প্রভাব খাটিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
আন্দোলনকারী চাকুরীপ্রার্থী মিহির ঘোষ বলেন, 'মেধা তালিকায় নাম না থাকলেও চাকরি পেয়েছেন অনেকেই। অথচ আমরা মেধা তালিকাভুক্ত হয়েও নিয়োগ পাইনি।'
একই দাবি করেছেন ভুক্তভোগী চাকরী প্রার্থী হিমাদ্রি মন্ডল। তিনি কমিশনের ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘শুধু টাকার বিনিময়ে চাকরী দেওয়া হয়নি, স্বজন পোষণও করা হয়েছে সিএসসিতে। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারিতা করে নিয়োগ করেছে কমিশন।'
তিনি বলেন, 'এখনও পর্যন্ত যারা চাকরি পেয়েছে, কোন কলেজে চাকরি পেয়েছে, তাদের কলেজে পড়ানোর আদৌ যোগ্যতা আছে কিনা সেটুকুও প্রকাশ করেনি কমিশন। এরই প্রতিবাদে আমরা অবস্থান বিক্ষোভে বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের রুখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পুলিশ-প্রশাসন। তবে, আমাদের লড়াই আদালতে হবে।’
এদিন বিনয় কৃষ্ণ পাল নামের এক আন্দোলনকারী দাবি করেন, 'মহামান্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন স্কোরশিট প্রকাশ করতে পারলেও, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এবং তথ্য কমিশনের অর্ডারের ভিত্তিতেও স্কোর শিট প্রকাশ করতে পারেনি কলেজ সার্ভিস কমিশন। কারণ, কলেজ সার্ভিসে দুর্নীতির মাত্রা এবং টাকার খেলা স্কুল সার্ভিস কমিশনের থেকেও কয়েক গুণ বেশি।'
প্রিয়াঙ্কা কন্ডু দাবি করেন, ‘সিএসসি’র চেয়ারম্যান দীপক করের তত্বাবধানেই অধ্যাপক নিয়োগে দুর্নীতি শুরু হয়েছে। দুর্নীতির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে সিএসসি। প্রকৃত মেধাবীদের বঞ্চিত করে চাকরী দেওয়া হয়েছে মেধা তালিকায় নাম না থাকা ব্যক্তিদেরও। কী জন্য, কার নির্দেশে এসব হয়েছে, তা জানতে আমরা তদন্তের দাবি করছি। বাংলার ছাত্র যুবকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দায়ে দীপক করকে পদত্যাগ করতে হবে।’
চাকরী প্রার্থীরা দাবি করেছেন, কলেজ সার্ভিস কমিশনে দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে প্রায় ১৭০টির বেশি কেস চলছে। আজ না হোক কাল, আদালতের নির্দেশে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন SSC চেয়ারম্যান সুবিরেশ বা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের মতো অনেকই কারাগারে যাবেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন