আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসক এবং আন্দোলনরত সাধারণ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে সামাজিক ভাবে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার সমাজ মাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে একথা জানালেন রাজ্যপাল। পাল্টা রাজ্যপালকে বিঁধলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
এদিন সমাজ মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘লেডি ম্যাকবেথ’ বলে সম্বোধন করে রাজ্যপাল বলেন, “রাজ্যপাল হিসাবে আমি মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারি না। বাংলার সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে আমি স্থির করেছি, আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক ভাবে বয়কট করব। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও সরকারি মঞ্চে থাকব না। কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী যুক্ত থাকলে, সেখানে আমি থাকব না।”
এরপরেই রাজ্যের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দোষারোপ করে বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। রাজ্যে আইনের শাসন বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তিনিই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সকলকে রক্ষা করার বদলে, প্রতিবাদে নেমেছেন।”
এরপরেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে তিনি লজ্জিত। আন্দোলনকারীরা কমিশনারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে, তাতে তিনি মর্মাহত। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান বলেন, “মানুষ দাবি জানাচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি পদক্ষেপ করা উচিত।”
অন্যদিকে, রাজ্যপালের এই ভিডিও বার্তার পাল্টা দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, “রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যে কুৎসিত অভিযোগগুলি রয়েছে, তাতে তো তাঁকেই সামাজিক ভাবে বয়কট করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বলেছেন, তিনি রাজভবনে একা যাবেন না। ১৫ অগস্ট সাংবিধানিক সৌজন্যের জন্য রাজভবনে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেননি। খোলা বারান্দায় অন্য সকলের সঙ্গে বসেছিলেন। রাজ্যপালের সঙ্গে দূরত্ব রেখেছেন। রাজ্যপাল সামাজিক ভাবে বয়কট হচ্ছেন বলেই এই কথাগুলি বলছেন।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন