প্রায় দেড় মাস পর গত সপ্তাহে কর্মবিরতি তুলে কাজে ফিরেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে হাসপাতালগুলি। আর এই আবহে এবার জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে কটাক্ষ করলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, “এত নাটক করে, রাত জেগে কী হল? ঘটনার পরিবর্তন কি হল? ক’জন সাজা পেল?”
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে টানা ৪২ দিন কর্মবিরতির পর ২১ সেপ্টেম্বর থেকে কাজে ফিরেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, আংশিক পরিষেবা শুরু করেছেন তাঁরা। সমস্যার সমাধান না হলে পুনরায় কর্মবিরতি চালু করতে পারেন। সেই নিয়ে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করে জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, “যাঁদের পদত্যাগ চেয়েছিলেন ওঁরা, তাঁরা প্রোমোশন পেয়েছেন। পিছন থেকে এই আন্দোলন চালাচ্ছেন যাঁরা, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁচানোর জন্য এসব নাটক করছেন না তো?"
এরপরেই দিলীপ আরও বলেন, "রাত জেগে বাতি জ্বালিয়ে ছবি তোলার জন্যই কি দেড় মাস ধরে বাংলার মানুষ কষ্ট পেলেন? স্বাস্থ্য পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেল হাসপাতালগুলিতে? এর জবাব দিতে হবে না? এই যে আন্দোলন করে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলে কী লাভ হল? আপনারা সরকারের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলছেন না।“
তিনি আরও বলেন, “সন্দীপ ঘোষও অনুব্রতর মতো ছাড়া পেয়ে যাবেন। বিনীত গোয়েল দিব্যি ঘুরে বেড়াবেন। সরকারের কি কোনও দোষ নেই? স্বাস্থ্য়মন্ত্রীর পদত্যাগ হবে না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশমন্ত্রী, তাঁর সাজা হবে না? কেন মানুষকে ধোঁকা দিয়ে এভাবে আন্দোলনের নামে রাস্তায় নামানো হচ্ছে?”
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের 'পোস্টমর্টেম'ও দাবি করেন দিলীপ। তিনি বলেন, "এত বড় আন্দোলন, এত বড় শো, রোজ একবার করে রাস্তায় এসে নাটক, তালি দেওয়া। রেজাল্ট কী হল? রেজাল্ট চাই, পরিবর্তন চাই। আবার কোনও মহিলা ডাক্তারের উপর এমন হবে না, কেউই কি গ্যারান্টি দিতে পারবেন? হাসপাতালে দাদাগিরি, গুন্ডামি চলছে। ভয়ের পরিবেশ রয়েছে। বেড পেতে, ওষুধ পেতে, ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে টাকা দিতে হয়। এর কি কোনও পরিবর্তন হবে? সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন।"
যদিও দিলীপের এই মন্তব্যকে আমল দিতে নারাজ জুনিয়র চিকিৎসকেরা। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সদস্য মানস গুমটা জানান, "মানুষ ন্যায় বিচার চেয়েছেন এই নৃশংস হত্যার ঘটনায়। যাঁরা সরাসরি যুক্ত এই ঘটনায়, প্রমাণ লোপাটে যাঁরা সচেষ্ট ছিলেন, প্রত্যেকের শাস্তির জন্যই এই আন্দোলন। যাঁরা এসব বলছেন, তাঁরা মানুষের মধ্যে নেই অথবা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তাই এমন মন্তব্য করছেন।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন