ভারতীয় রেলকে বেসরকারিকরণ করার পথে হাঁটছে কেন্দ্র। তুলে দেওয়া হচ্ছে শূন্যপদের সংখ্যা। এই অভিযোগ তুলে কলকাতার ফেয়ারলি প্লেসে বিক্ষোভ দেখালো ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন (DYFI) সহ একাধিক বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠন। বৃহস্পতিবার, বেলা ৩ টা নাগাদ, কলকাতার রাজপথে এই বিক্ষোভে শামিল হন কয়েক হাজার ছাত্র-যুব।
বাম ছাত্র যুব সংগঠনের অভিযোগ, ভারতীয় রেলে ৮০ হাজার শূন্যপদ তুলে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই পথে নেমেছে বাম ছাত্র যুবরা। পদ অবলুপ্তি নিয়ে এদিন কেন্দ্র সরকারকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন DYFI-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এ দিন বিক্ষোভ সমাবেশে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘রেলের শূন্যপদ দেশের সরকার তুলে দিচ্ছে। রেলকে বেচে দিচ্ছে। রেল হলো সবচেয়ে বড় সংস্থা যা ভারতের অর্থনীতিকে ধরে আছে।’
কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য সরকারকেও নিশানা করেন মীনাক্ষী। যুবনেত্রী এদিন দাবি করেন, ‘মানুষ তো আর কেন্দ্র এবং রাজ্যকে এই জন্য ভোট দেয়নি যে, তারা সবকিছু বেচে দিক। এ রাজ্যেও সরকার দশ বছরে ২ লক্ষ ঠিকা কর্মী নিয়োগ করেছেন। বেশি টাকা খরচ করছেন, কিন্তু যারা কাজ করছেন তাঁরা ৫-৬ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন।’
রেলের পাশাপাশি SSC ইস্যু নিয়েও সরব
শুধু রেল নয়, এ রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সরব হন বামপন্থী ছাত্র-যুব ঐক্যের অন্যতম মুখ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘SSC-র দিকে তাকিয়ে দেখুন, হাইকোর্ট একের পর এক রায় দিচ্ছে। যে ছেলেমেয়েরা চাকরী পেলো - মেধার ভিত্তিতে হোক, ঘুষের ভিত্তিতে হোক বা দুর্নীতিতে হোক; আজকে সেই ছেলেমেয়েদেরকে একটা সামাজিক বাধা বিপদের জায়গায় ফেলে দিচ্ছে সরকার। এমনকি তাঁদের পরিবারগুলোকেও ফেলে দিচ্ছে। দুর্নীতিগুলোতে হাইকোর্ট স্ট্যাম্প লাগাচ্ছে যে, দুর্নীতি হয়েছে। এই সবকিছু হয়েছে এই সরকারের জন্য।’
কেন্দ্র-রাজ্যকে অল-আউট নিশানা
বিক্ষোভের মাঝে বামপন্থী নেত্রী মীনাক্ষী বলেন, ‘একসময় আজকে যারা দেশের সরকারে আছে, তাদের সঙ্গে একসাথে ঘর করেছে এই রাজ্য সরকার। ওদের মূল লক্ষ্য হল বেকারত্ব বাড়ানো। নিয়োগ না করা এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি করা। সে রকমই রেলে আজকে তারা ৮০ হাজার পদ বাতিল করেছে। এই রেলকে বাঁচাতে হবে। শূন্যপদ তুলে দেওয়া যাবে না।’
একইসঙ্গে তিনি জানান, ‘সম্প্রতি একটি গ্লোবাল টেন্ডার হয়েছে, সেই টেন্ডারে সুইডেনের এক বেসরকারি কারখানাকে রেল ইঞ্জিন তৈরি করার বরাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, দেশের চিত্তরঞ্জনের রেল ইঞ্জিন কারখানাকে সেই বরাত দেওয়া হয়নি।’ কিসের স্বার্থে, কার স্বার্থে মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ, তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন মীনাক্ষী।
মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ছাড়াও এদিনের বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন সৃজন ভট্টাচার্য (SFI), তাপস সিনহা (AIYF), কৌশিক ভৌমিক (PSU), সন্ময় বিশ্বাস (YL), সাফিউল হাসান (SB), সৈকত গিরি (AISF), কলতান দাশগুপ্ত (DYFI), রাজীব ব্যানার্জি (RYF) এবং DYFI সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিমঘ্নরাজ ভট্টাচার্য।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন