ফের টাকার পাহাড় উদ্ধার শহরে। ‘মহাদেব অ্যাপ’ নামক এক অনলাইন বেটিং সংস্থার কলকাতার দফতরে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ইডি আধিকারিকরা উদ্ধার করেছেন প্রায় ৪১৭ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, টাকার পাহাড়ের সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে আরও কয়েক কোটি টাকার সোনার বাট, গহনা ইত্যাদি। ইডি সূত্রে খবর, প্রায় একবছর আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ‘বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে যে পরিমাণ ‘সম্পদ’ পাওয়া গিয়েছিল, তা এই অনলাইন বেটিং অ্যাপের দফতর থেকে উদ্ধার হওয়ার অর্থের কাছে কিছুই নয়।
ইডি সূত্রে খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের নজরে এসেছে এই ‘মহাদেব অ্যাপ’ নামক অনলাইন বেটিং সংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই সংস্থার মূল সদর দফতর দুবাইয়ে। সেখানে বসেই ভারতের একাধিক মেট্রো শহরে প্রতারণার ছক কষা হয়েছে। বিশেষ করে মাঝবয়সী থেকে বয়স্করা এই বেটিং অ্যাপে টাকা লাগাতেন। তাদেরকেই ‘টার্গেট’ করে বিভিন্ন শহরে প্রতারণার জাল বিছনো হয়েছিল দুবাই থেকেই। দেশের একাধিক শহর থেকে দুবাইয়ের ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাচার করা হত বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এমনকি, এই প্রতারণাকাণ্ডের সঙ্গে হাওয়ালা যোগেরও প্রমাণ পেয়েছে ইডি।
এমনই এক প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার সকালে কলকাতা, ভোপাল ও মুম্বইয়ে ওই সংস্থার দফতরে তল্লাশি অভিযান চালান ইডি আধিকারিকরা। তার মধ্যে সংস্থার কলকাতার দফতর থেকে নগদ ৪১৭ কোটি টাকা, সোনার বাট-গহনার পাশাপাশি সংস্থার প্রতারণা পদ্ধতি সংক্রান্ত একাধিক নথিও পাওয়া গিয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) সূত্রে জানা গিয়েছে, ছত্তিশগড়ের ভিলাইয়ের বাসিন্দা সৌরভ চন্দ্রকার এবং রবি উপ্পল নামক দুই ব্যক্তিই এই ‘মহাদেব অ্যাপ’-এর মূল কর্তা এবং দুবাইয়ে বসেই ভারতে প্রতারণার ফাঁদ ছড়িয়েছেন তারা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, যারা এই বেটিং অ্যাপের মাধ্যমে টাকা লাগাতেন তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকা জিতিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির টোপ দেওয়া হত। এবং সেই ফাঁদেই পা দিতেন অ্যাপ ব্যবহারকারীরা। প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগেই উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে অনলাইন গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে টাকা জিতিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে আমির খান নামক কলকাতার এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখ্য, এই ‘মহাদেব অ্যাপ’ নামক বেটিং অ্যাপের সঙ্গে তার কর্মপদ্ধতি হুবহু মিলে গিয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা খতিয়ে দেখছে, ওই আমির খানের সংস্থার সঙ্গে ‘মহাদেব অ্যাপ’-এর কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন