আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের সাথে পুলিশের বিক্ষোভের জেরে ফের উত্তপ্ত হল মহানগরী। নিয়োগের দাবিতে বুধবার কালিঘাট মেট্রো স্টেশন দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন প্রচুর চাকরিপ্রার্থী। দাবি একটাই, অবিলম্বে শূন্যপদে নিয়োগ চাই। এমন সময় পুলিশ এসে আন্দোলনে বাধা দেওয়ায় চাকরিপ্রার্থীদের সাথে তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয়। চাকরিপ্রার্থীদের চ্যাংদোলা করে পুলিশ ভ্যানে তুলে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়।
সূত্রের খবর, কালিঘাট থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনের দিকে এগোনো শুরু হতেই ঘটনাস্থল থেকে চাকরিপ্রার্থীদের টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় পুলিশ। বেশকিছু আন্দোলনকারী রাস্তায় শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানায়। তাঁদেরও বলপূর্বক প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
শুধু প্রিজন ভ্যান নয়, বেসরকারি বাস এমনকি তাঁদের ট্যাক্সিতেও তুলতে দেখা যায় পুলিশকে। আন্দোলন চলাকালীন 'নিয়োগ চাই' বলে স্লোগান তোলেন চাকরিপ্রার্থীরা। আবার কেউ কেউ বলেন 'হয় চাকরি দাও, নাহলে বুলেট দাও'। ধস্তাধস্তির জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশকিছু চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে তাঁরা পরীক্ষা দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সেই নিয়োগ এখনও হয়নি৷ বিক্ষোভের সময়ে পুলিশ তাঁদের মারধর করেছে। মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরেও তাঁদের মার খেতে হচ্ছে!
বিক্ষোভস্থল থেকে এক চাকরিপ্রার্থী পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে জানান, "কি আর বলব! আমাদের তো এটাই রোজকার একটা জগৎ হয়ে গেছে। আমরা যেখানেই যাচ্ছি, পুলিশ আমাদের ধরপাকড় করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বন্ধুস্থানীয় সবাইকে ধরে ধরে মারছে। আমার হাতের মধ্যেও লেগেছে। আমরা তো সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাইনি। আমাদের চাকরি হল না, পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল।"
আরও এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, "কেউ কি আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া ৮ বছর ফিরিয়ে দিতে পারবে? যাদের বয়স পার হয়ে গেছে, তাঁদের বয়স কি ফিরিয়ে দিতে পারবে? আমরা এর বিচার চাই। সমস্ত সিট আপডেট করে আপার প্রাইমারি নিয়োগ দিতে হবে। নাহলে আমরা সুইসাইড করতে বাধ্য হব। হয় চাকরি দিন আর নাহলে মৃত্যু দিন।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন