কলকাতা হাইকোর্টে জোড়া ফলায় বিদ্ধ পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। ‘দুর্নীতি’ র অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে কমিশন। যার জেরে, চাকরি হারাচ্ছেন নবম-দশম ও গ্রুপ ডি’র প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী।
বৃহস্পতিবার, এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রবীণ আইনজীবী, রাজ্যসভার সাংসদ তথা সিপিআই(এম) নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য।
আইনজীবী হিসাবে পিপলস রিপোর্টার (People’s Reporter)-কে তিনি জানান, ‘আমরা এই দুর্নীতি বন্ধের জন্য মামলা করেছিলাম। এই নিয়ে তদন্ত চলছে এবং তদন্ত করতে করতে দেখা যাচ্ছে এর গভীরতা অনেক বেশি। এর সঙ্গে যুক্ত রাজ্য সরকারের প্রধান। তাঁর পরিকল্পনার মতই এই দুর্নীতি হয়েছে। তবে সত্য প্রকাশিত হয়েছে।'
তিনি বলেন, ‘যারা দুর্নীতিগ্রস্ত বা দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাদের চাকরি যাবেই - এটা আমরা আগেই বলেছিলাম এবং যারা যোগ্য প্রার্থী, তাদের নিয়োগ হবে। মনে হচ্ছে, আদালত ঠিক নির্দিষ্ট পথে যাচ্ছে। সবথেকে বড় কথা হচ্ছে, যাদের পরিকল্পনাতে এই দুর্নীতি হয়েছে, তাদের কী হবে? তাদের কীভাবে উপযুক্ত সাজা দেওয়া যাবে সেটাই বড় প্রশ্ন।'
সবথেকে বড় কথা হচ্ছে, যাদের পরিকল্পনাতে এই দুর্নীতি হয়েছে, তাদের কী হবে? তাদের কীভাবে উপযুক্ত সাজা দেওয়া যাবে সেটাই বড় প্রশ্ন।'
এ নিয়ে সিপিআই(এম)-র কী ভাবনা?
এই প্রশ্নের জবাবে বিকাশ বাবু বলেন, ‘আইনজীবী হিসেবে আমার যে ভাবনা চিন্তা, তারসঙ্গে সিপিআইএমের ভাবনা চিন্তার কোনও পার্থক্য নেই। প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য আমরা লড়াই করছি। একটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার যে চক্রান্ত চলছে, পরিকল্পনা করে যে দুর্নীতি করা হয়েছে তাকে উন্মোচিত করা, অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া, এটা শুধু আমার পার্টি নয় সকল সুচিন্তিত নাগরিকের আকাঙ্ক্ষা।
সহ নাগরিক হিসাবে বাংলার ছাত্র-যুবকদের নিয়ে কী ভাবছেন?
রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলার ছাত্র-যুব সমাজের কাছে আমার একটি বার্তা আছে। তা হল, যারা দুর্নীতি সংগঠিত করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলুন। যাদের চাকরি গেল, তারা এইসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। সেটার জন্য যদি কঠোর সংগ্রাম করতে হয় সেই সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হন। রাজ্যটাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে, এটাই শেষ কথা।’
যাদের চাকরি গেল, তারা এই সকল প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। সেটার জন্য যদি কঠোর সংগ্রাম করতে হয় সেই সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হন। রাজ্যটাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে, এটাই শেষ কথা।
অভিযোগের সুরে তিনি জানান, ‘মনে রাখতে হবে, এই তৃণমূল সরকারের জন্মই হয়েছে দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে। যেটি প্রথম দিন থেকেই আমি এবং আমার পার্টি বলে আসছে। এটি মানুষদের বুঝতে হয়তো কিছুটা সময় লেগেছে। আস্তে আস্তে সকলে বুঝতে পারছেন। এই দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের মূল-উৎপাটন না করতে পারলে, পশ্চিমবঙ্গের কপালে দুঃখ আছে। তাই সকলের উচিত, এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে পশ্চিমবঙ্গের যে সম্মানহানি হয়েছে তা পুনরুদ্ধার করা।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন