এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি বর্তমানে বিজেপি নেতা অভিজিৎ গাঙ্গুলি। রায় ঘোষণার পর তিনি বলেন, ‘‘আদালত উপযুক্ত রায় দিয়েছে। তবে আজ আমার স্বস্তির দিন নয়। কারণ এই মুখ্যমন্ত্রীর অধীনেই আমার রাজ্য চলছে। এত দিন ধরে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে প্রকৃত জ্ঞানী চাকরিপ্রার্থীদের। আশা করব, তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করা হবে।’’
উল্লেখ্য, মার্চ মাসে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন অভিজিৎ গাঙ্গুলি। ৭ মার্চ বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তাঁকে তমলুক কেন্দ্র থেকে লোকসভার প্রার্থী করেছে বিজেপি।
অভিজিৎ গাঙ্গুলি আরও বলেন, ‘‘যোগ্য প্রার্থীদের ঠকিয়েছেন এই মিথ্যাচারী মুখ্যমন্ত্রী। বঞ্চিতদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান সকলে আছেন। সকলের উচিত মমতাকে বয়কট করা। ওঁকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। আমার খারাপ লাগছে, এমন এক জন মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে আছি। উনি জোচ্চুরিকে প্রশ্রয় দেন। বিন্দুমাত্র লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করা উচিত। রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনে নির্বাচন হওয়া উচিত।’’
কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, ‘‘আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থা সাধারণত অবিচার থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতিরাও সেই কাজ করেছেন। এখন আমাদের আনন্দের দিন নয়। আমি যখন বিচার করছিলাম, অনাচার ধরা পড়েছিল। আবার ধরা পড়েছে। উপযুক্ত রায় দিয়েছে আদালত।’’
উল্লেখ্য, এসএসসি মামলা প্রথম শোনেন অভিজিৎ গাঙ্গুলিই। একাধিক অবৈধ চাকরিপ্রাপকদের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। পরে এই মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। এবং আগামী মে মাসের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টকে এই মামলার নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। ২০ মার্চ বিচার শেষে রায় স্থগিত রেখেছিল হাইকোর্ট।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার রায় দান করে। ২০১৬ সালের গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম, একদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ - পুরো প্যানেলই এদিন বাতিল করে দিয়েছে আদালত। প্রায় ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হবার পরে যারা চাকরি পেয়েছে তাদের প্রাপ্ত বেতন ১২ শতাংশ সুদ সহ আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। জেলার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা আদালতের কাছে জমা দিতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন