১৫ দিনের মধ্যে সর্বসমক্ষে ক্ষমা চাইতে হবে, রাজ্যপাল বোসকে কড়া আইনি নোটিশ প্রাক্তন উপাচার্যদের

People's Reporter: সর্বসমক্ষে প্রাক্তন উপাচার্যদের কাছে ক্ষমা চাইতে বলে বৃহস্পতিবার রাজভবনে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যরা।
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসফাইল ছবি - সংগৃহীত
Published on

রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সি ভি আনন্দ বোসকে এবার আইনি নোটিশ পাঠালেন ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। আচার্য বোসের মন্তব্যে তাঁদের ‘সম্মানহানি’ হয়েছে বলে অভিযোগ প্রাক্তন উপাচার্যদের। এই জন্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সর্বসমক্ষে রাজ্যপালকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই নোটিশে।

ক্ষমা না চাইলে আচার্যের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাক্তন উপাচার্যরা। পাশাপাশি, প্রত্যেক উপাচার্যের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা করে জরিমানাও দাবি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

গত জুলাই মাসে রাজ্যের ২৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের মেয়াদ বৃদ্ধি করার কথা ছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতরের। কিন্তু রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই মাত্র ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ বাড়ান রাজ্যপাল। সেখান থেকেই এই ঘটনার সূত্রপাত। এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে এক ভিডিও বার্তায় রাজ্যপাল দাবি করেন, “আপনারা হয়তো জানতে চাইতে পারেন, রাজ্য সরকারের মনোনীত উপাচার্যদের মেয়াদ বাড়ানো হল না কেন? কী করে তাঁদের মেয়াদ বৃদ্ধি করব? তারা কেউ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রাজনীতির অংশ, কেউ আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের হেনস্থা করেন।”

রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেয়াদ বৃদ্ধি না করায় উপাচার্যের পদ হারানো ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তাঁরা জানান, আচার্য উপাচার্যদের মেয়াদ বৃদ্ধি না করতেই পারেন, কিন্তু তাই বলে তাঁদের নিয়ে অসম্মানজনক প্রচার করতে পারেন না। এই নিয়ে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।

এরপরেই সর্বসমক্ষে প্রাক্তন উপাচার্যদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাজভবনে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যরা। যে ১২ জন নোটিশ পাঠিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য স্বাগতা সেন, গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য শান্তি ছেত্রী, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মানস সান্যাল, রানি রাসমণি গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ প্রমুখরা।

এই নোটিশ নিয়ে ওমপ্রকাশ মিশ্র জানিয়েছেন, “আমাদের নোটিশ রাজ্যপালের জন্য নয়, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের উদ্দেশ্যে।” পাশাপাশি, রানি রাসমণি গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ জানিয়েছেন, “আচার্যের মন্তব্যে আমাদের মানহানি হয়েছে। কোনও তথ্য-প্রমাণ ছাড়া আচার্য আমাদের নিয়ে কীভাবে এইধরণের মন্তব্য করতে পারেন? এর জন্য আমাদের সামাজিক ও মানসিক হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে।”

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in