চাকরি বাতিলের পাশাপাশি ববিতা সরকারকে কড়া ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। তিনি বলেন, ববিতা যে কাজ করেছে তার জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ করা যেতো। আদালতের নির্দেশের পরই রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েন ববিতা সরকার।
চাকরি পেয়েও যে চাকরি হারাতে হবে তা হয়তো জানা ছিল না তাঁর। মঙ্গলবার বিচারপতি গাঙ্গুলির নির্দেশে চাকরি গেলো ববিতা সরকারের। এদিন আদালতে ববিতার উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, "আপনার ভুলের জন্যই এই নির্দেশ দিতে হয়েছে। চাইলেই আমি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারতাম। যতদিন চাকরি করেছেন সেই মাইনে নেওয়া হচ্ছে না। এটাই সান্ত্বনা আপনার। পারলে পরের নিয়োগ প্রক্রিয়াতে অংশগ্রহণ করুন।"
আদালত সূত্রে খবর, বিচারপতির ধমকের মুখে কেঁদে ফেলেন ববিতা সরকার। তিনি বলেন, পুরো টাকা ফেরত দিতে কিছু সময় লাগবে তাঁর। একটি সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনেছেন তিনি। তিন মাস অন্তত সময় দেওয়া হোক তাঁকে। তিনি বলেন, "আমি ভুলটা জানতাম না। আমার চাকরি চলে যাচ্ছে। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একটু সময় দেওয়া হোক।"
বিচারপতি গাঙ্গুলি তাঁর নির্দেশে জানিয়েছেন, অঙ্কিতা অধিকারীর থেকে বেতন বাবদ পাওয়া প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা অনামিকা রায়কে ফেরত দিতে হবে ববিতা সরকারকে। রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে এই টাকা ফেরত দিতে হবে। প্রথমে ১১ লক্ষ টাকা ১৯ মে-র মধ্যে জমা দিতে হবে। বাকি টাকা ৬ জুনের মধ্যে জমা করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি আজ ববিতা সরকারের চাকরি বাতিল করে তা অনামিকা রায়কে দিতে বলেন। এই বিচারপতি গাঙ্গুলির নির্দেশেই প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। ববিতার নিয়োগের কয়েকমাস পরেই তাঁর চাকরি বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা রায়। তাঁর অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে আবেদন করার সময় স্নাতকস্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখিয়েছেন ববিতা। স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছিলেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অথচ, আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে স্নাতক স্তরে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি পেয়েছেন তিনি।
তিনি আরও দাবি করেছিলেন, এর ফলে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে গিয়েছে। যদি সঠিক অ্যাকাডেমিক স্কোর ধরা হয়, তাহলে ববিতার র্যাঙ্ক অনেক পিছিয়ে যাবে এবং যোগ্য প্রার্থী হিসাবে ২০ জনের তালিকায় ২০ নম্বরে উঠে আসবে তাঁর নাম। অর্থাৎ চাকরিটা তাঁরই পাওয়ার কথা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন