দুর্নীতির মারপ্যাঁচে যেন জর্জরিত রাজ্য সরকার। একদিকে যখন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, গোরু পাচার সহ একাধিক মামলায় বিরোধীদের লাগাতার নিশানায় রয়েছে শাসক দল তৃণমূল, ঠিক সেই সময় মঙ্গলবার কলকাতা কর্পোরেশনের চুক্তিভিত্তিক ঠিকা শ্রমিকদের বিক্ষোভে কার্যত উত্তাল হল বেহালা পৌরসভার চত্বর।
তাঁদের মূল অভিযোগ, সরকার তাঁদের দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের বঞ্চিত করছে। বেতন, বোনাস কোনটাই সঠিক সময় মতো হয়না। বেতন মাত্র ৭৮০০ টাকা, অথচ সেটাও তাঁরা ঠিক সময় পাচ্ছেননা। এমনকি, তাঁদের অজ্ঞাতে রেখেই বেআইনিভাবে পুরসভায় ৮৫৫ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে।
সেইজন্যই আজ তাঁরা ৫০০ জন কর্মী নিয়ে বেহালা পৌরসভার অফিস ঘেরাও করে। ন্যূনতম বেতন ২০ হাজার টাকা করার দাবিতে বিক্ষোভস্থল থেকে স্লোগান তোলেন ঠিকা কর্মীরা। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়ে মঙ্গলবার ১২১, ১২৩, ১২৪ এবং ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঠিকা কর্মীরা তাঁদের বিভিন্ন কাজ বন্ধ রেখেছেন।
পৌরসভা চত্বর থেকেই ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের ঠিকাকর্মী সুব্রত মাইতি পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে জানান, বাইরে থেকে বেআইনিভাবে ৮৫৫ জনকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ২২-২৫ বছর আমরা মাত্র ৭৫০০ টাকা বিনিময়ে কাজ করছি, আমাদের স্থায়ী করা হল না।
সুব্রত বাবু আরও জানান, করোনা পরিস্থিতিতে নিজেদের জীবন বাজি রেখে আমরা মানুষের জন্য কাজ করেছি। তাও আমরা বেতন, বোনাস কিচ্ছু ঠিকমত পাইনা। পুজোয় সবাই যখন আনন্দ করছে, তখন আমাদের মাত্র ১৫০০ টাকা বোনাস দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় এত পরিমাণ টাকা অনুদান দিতে পারছেন, আর আমাদের বেলায় মাত্র ২৫০০ টাকা! আমাদের বেতনও বাড়ানো হয়নি।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেন, কলকাতা কর্পোরেশন ঠিকা শ্রমিক ঐক্যমঞ্চ-র পক্ষ থেকে আজ আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। এর আগেও আমরা বহুবার এখানে এসেছি। ২০২০ সালে আমাদের নিয়োগ করা হয়েছে। এর আগেও আমরা আমাদের দাবিগুলো জানিয়েছিলাম। মেয়র (ফিরহাদ হাকিম) সাহেবের কাছে আমাদের সমস্ত কাগজ জমা পড়েছিল। সেই কাগজগুলিতে মেয়রের সইও আছে। আমাদের বোকা বানানো হয়েছে। বেহালা, গার্ডেনরিচ সহ অন্যান্য সব এলাকার শ্রমিকরা মিলে আমরা কিছুদিন আগেও হেড অফিস অভিযান করেছিলাম।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন