পঞ্চায়েত ভোটের আগে অন্তর্দ্বন্দ্বে জেরবার বঙ্গ বিজেপি। প্রকাশ্যে চলে আসছে দিলীপ ঘোষের সাথে সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারীর দ্বন্দ্ব। এই নিয়ে চিন্তায় গেরুয়া শিবির।
মঙ্গলবার এগরায় বিজেপির তরফ থেকে একটি বড় প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। এই মিছিলের নেতৃত্ব কে দেবেন, তা নিয়ে দিলীপ ঘোষের সাথে শুভেন্দু অধিকারীর লড়াই প্রকাশ্যে এসেছে। প্রথমে দুজনের নাম পোস্টারে থাকলেও পরে কেবল শুভেন্দুর নাম লেখা পোস্টার লক্ষ্য করা যায় এলাকায়। কী কারণে শেষ মুহূর্তে দিলীপের নাম পোস্টার থেকে বাদ গিয়েছে তা নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও বিজেপির ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, বেশ কিছুজনের আপত্তিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আজ নিউটাউন ইকো পার্কে সাংবাদিকদের সামনে দিলীপ ঘোষ বলেন, "কারা ছবি ছেপেছে আমি জানি না। আমাকে আহ্বান করা হয়েছিল, কারণ ওটা আমার লোকসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। তাই হয়তো সাংসদ হিসেবে আমার ছবি ছেপেছিল। যারা পোস্টার লাগিয়েছে তারা এই বিষয়ে আরও ভালো বলতে পারবে।" উল্লেখ্য, এগরা মেদিনীপুর লোকসভার মধ্যে পড়লেও এটা বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অংশ, যা শুভেন্দুর এলাকা হিসেবে পরিচিত।
প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও বিতর্কের জল এতোটাই গড়িয়েছে যে পদযাত্রায় যাওয়া বাতিল করেছে দিলীপ ঘোষ। যদিও এই প্রসঙ্গে কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, "মঙ্গলবার দিলীপ ঘোষের উত্তরবঙ্গে কর্মসূচি রয়েছে। সেই কারণেই তাঁর নাম পোস্টার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।"
অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষের সাথে সুকান্ত মজুমদারের দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে এসেছে। রবিবার বিজেপির রাজ্য কার্যনির্বাহী বৈঠকে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, দলের উপরের তলার সঙ্গে নিচু তলার কোনও যোগাযোগ নেই। মণ্ডল স্তরে সংগঠন নেই। অঞ্চল কমিটি হয়েছে কিন্তু লোক নেই। জেলা সভাপতিদের বদল করারও হুঁশিয়ারি দেন।
দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির এই মন্তব্য়ের সাথে একমত নন দলের বর্তমান রাজ্য সভাপতি। এই প্রসঙ্গে সোমবার সাংবাদিকদের সামনে সুকান্ত মজুমদার বলেন, "উনি (দিলীপ ঘোষ) যেটা বলেছেন, সেটা গ্রহণ করছি না। সাংগঠনিক বিষয়ে বাইরে কেন আলোচনা করব? দলের ভিতরে অনেক কথাই হয়। উনি যখন রাজ্য সভাপতি ছিলেন, তখন মুকুল রায় রোজ বলতেন দল ঠিক ভাবে চলছে না।"
এই নিয়ে পাল্টা দিলীপ বলেন, “আমি ওঁকে (সুকান্ত মজুমদার) কিছু বলিনি। জেলায় যাঁরা সংগঠন করবেন, তাঁদের বলেছি। কোথায় ভুল হচ্ছে, কী কী করতে হবে, সেটা বলেছিলাম।”
সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির গোষ্ঠীদন্দ্ব প্রকাশ্যে। যা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে গেরুয়া শিবিরে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন