আজ রাজ্যের ছয় বিধানসভা উপনির্বাচনে ফলাফল। তার আগে বাংলায় দলের খারাপ অবস্থা নিয়ে ফের একবার মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দলের ডাউনফল শুরু হয়েছে। রেজাল্ট ভালো হচ্ছে না।‘ পাশাপাশি, রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার জল্পনাও উস্কে দিলেন তিনি।
একসময় তাঁর নেতৃত্বে বাংলায় বিজেপি সেরা ফল করেছিল। তখন তিনি ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে। তবে দল তাঁকে সভাপতি পদ থেকে অনেক আগেই সরিয়ে দিয়েছে। এমনকি চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর কেন্দ্র মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে তাঁকে প্রার্থী করা হয় বর্ধমান-দূর্গাপুর আসনে। কিন্তু পরাজিত হন দিলীপ। তারপর থেকে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে একাধিক মন্তব্য করেছেন তিনি। আসন পরিবর্তন নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি বহুবার। শোনা যায়, দলের অন্দরেই কোণঠাসা দিলীপ। আর এবার সেই দিলীপ ঘোষ উস্কে দিলেন রাজনীতি ছাড়ার জল্পনা।
এদিন দিলীপকে বলতে শোনা যায়, ‘যতদিন ভাল লাগবে রাজনীতি, যতদিন সম্ভাবনা রয়েছে, ততদিন থাকব। এবার ভোটে লড়ব না দলকে বলেছিলাম। কারণ রেজাল্ট আমার জানা ছিল। একটা সময় আসে, পার্টি যে দায়িত্ব দেয় করতে হয়। আমাকে সর্বোচ্চ পদে বসানো হয়েছিল। আমার কল্পনায় ছিল না বিধায়ক, সাংসদ হব। দল দায়িত্ব দিয়েছে, করে দিয়েছি। দলকে জিতিয়েছি। লড়তে শিখিয়েছি দলকে। মনে হয়, আমার রাজনৈতিক দায়িত্ব শেষ হয়ে এসেছে।‘
যদিও দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য নিয়ে দলের নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘পরিবর্তনের মাধ্যমেই দল বাড়ে। দিলীপদার পর সুকান্তদা হয়েছেন, আগামীতে অন্য কেউ হবেন। এটা চলতেই থাকে। এতে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া কোনও ব্যাপার নয়। দিলীপদা অনেক সিনিয়র। বাংলার মাটিতে দিলীপদার মতো মানুষকে দরকার।‘
এদিন দিলীপ ঘোষকে আর জি কর কাণ্ড নিয়ে বিজেপির প্রায় নিশ্চুপ থাকা নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা যায়। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ টেনে দিলীপ বলেন, ‘একটা ইস্যুই রাজনীতি পাল্টে দেয়। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম ইস্যুতেই হাওয়া পাল্টে গিয়েছিল। এই যে এত ঘটনা ঘটছে, হয়ত আমাদের দল সেই ইস্যুগুলিকে নিতে পারছে না।‘
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির প্রশংসাও শোনা যায় দিলীপের গলায়। তিনি বলেন, রাহুল গান্ধীর থেকে অভিষেক ব্যানার্জি অনেক পরিণত। বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্য করেন।
যদিও দিলীপের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, ‘হাল ছেড়ো না বন্ধু, বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে।‘
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন