আর জি কর কাণ্ড নিয়ে এবার দ্বন্দ্বে জড়ালেন তৃণমূলের দুই নেতা মদন মিত্র এবং কুণাল ঘোষ। কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের দাবি, এই ঘটনা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেভেলের নয়। এটা মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপার। দলের মধ্যেই রয়েছে ’বিভীষণ’, এমনও দাবি করতে শোনা যায় মদনকে। এর পাল্টা কুণালের প্রশ্ন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে এই বিষয়টা জানাচ্ছেন না কেন?
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে উত্তাল রাজ্য। চিকিৎসকও সংগঠন থেকে নাগরিক সমাজ, সাধারণ মানুষ - বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন সকলেই। দীর্ঘদিন অনশনেও বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। পালন করেছেন কর্মবিরতি। গোটা ঘটনাটি সামলাতে রাজ্য সরকারকে বেশ বেগ পেতে হয়। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীনে।
এই পরিস্থিতিতে এক সংবাদমাধ্যমে কথা বলার সময় কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “অভিষেক বোধহয় অসুস্থ ছিল শুনেছি। অপারেশন করাতে গেছে। অসুস্থ অবস্থায় তো এগুলো পারবে না। তাছাড়া যে লেভেলে ব্যাপারটা ছিল, সেটা অভিষেকের লেভেলের ব্যাপার নয়। সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপার ছিল। ওখানে তো যুব কংগ্রেসের সমাবেশ করে কিছু করা যেত না। যদি ডাক্তারদের পাল্টা একটা যুব কংগ্রেসের সমাবেশ হত সেটা কখনই ভাল হত না, ভুল হত।“
যদিও তৃণমূল বিধায়কের এই দাবির পাল্টা জবাব দিয়েছেন আরেক তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই ট্যুইট করে তাঁর বক্তব্য জানিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর চোখের অপারেশনের জন্য বিদেশ যেতে হয়েছে। সমস্ত বিষয়ে নজর রেখেছেন। এই কথাগুলো এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। আমাদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল একটা পরিবার। নবীন-প্রবীণ প্রায় ৫টা প্রজন্ম একসঙ্গে লড়ছে।“
তবে মদন মিত্র এখানেই থেমে থাকেননি। তৃণমূল বিধায়কের দাবি, দলের মধ্যেই রয়েছে ‘বিভীষণ’। তিনি বলেন, “একটা কথা মনে রাখবে বিভীষণ না থাকলে কিন্তু রাম রাবণকে মারতে পারতেন না। বিভীষণরা চিরকালই ছিলেন এবং খুব ভাল পজিশনে ছিলেন। বিভীষণকে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। একটা বিভীষণ লম্বা চওড়া, পরিষ্কার একটা মানুষের মতো, বিভীষণ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আচরণ লক্ষ্য করলেই বিভীষণ পাবেন।“
মদনের দাবি দলের মধ্যেই রয়েছে ষড়যন্ত্রকারী। তিনি বলেন, “সিরাজের সময় যেমন জগৎ শেঠ, উমিচাঁদ ছিল তেমন আজও তাঁরা সক্রিয় তৃণমূলের ভিতরে সিপিআইএমের ভিতরে, বিজেপির ভিতরে সবকিছুর ভিতরে। শনাক্তকরণ কমিটি করে তাতে যদি আমাকে মেম্বার কর হয় আমি আমার মতামত দেব। লিখিতভাবে বলে দেব, কোথায় কোথায় ফুটো গুলো সিলিং লাগাতে হবে।“
এর উত্তরে কুণাল ঘোষ জানান, “উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিতভাবে জানিয়ে দিন, কোথায় কোথায় ছিদ্র আছে। কোন কোন পদ্ধতিতে উনি সেলোটেপ দেবেন।। নাকি অন্য কোন পদ্ধতি আছে, সিমেন্ট টিমেন্ট দেবেন।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন