নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া চাকরি বাতিলের যাবতীয় নির্দেশ মুলতুবি রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশের ভিত্তিতে সোমবার সব জেলার স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশ পাঠাল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। যেখানে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ না বেরোনো পর্যন্ত নবম এবং দশম শ্রেণির শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিল হবে না।
গত ১২ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এখনও পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্ট নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত যত চাকরি বাতিল করেছে, তা মুলতুবি রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ, যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের চাকরি আপাতত বাতিল হচ্ছে না।
সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশের ভিত্তিতে দু’দিন আগে এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। এবার বিজ্ঞপ্তি জারি করলো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ মেনে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিল করা হচ্ছে না। যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ আসে, তত ক্ষণ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দেওয়া নিয়োগপত্র বৈধ থাকবে তাঁদের।
উল্লেখ্য, বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের চাকরি বাতিল করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথমে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরিচ্যুতরা।
কিন্তু বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখে। এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। ১২ এপ্রিল এই মামলার শুনানিতে চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত আপাতত মুলতুবি রাখে শীর্ষ আদালত। বাগ কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে চাকরিচ্যুতদের চাকরি ফেরানো উচিত হবে কি না, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল আদালত।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত, সিটু নেতা ইন্দ্রজিত ঘোষ মঙ্গলবার এক ফেসবুক পোষ্টে জানিয়েছেন, "নির্লজ্জতার চূড়ান্ত। সাদা খাতা জমা দিয়ে যাদের চাকরি গেছিলো তাদের আবার রি-জয়েনিং করাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল কেপ্ট ইন এভিয়েন্স। সুপ্রিম কোর্ট তাদের চাকরি ফেরত দিতে বলেনি।"
তিনি আরও লিখেছেন, "একটা ঘটনা মনে করাবো প্রাইমারি তে ২৬৯ জনের চাকরিতে এরা রি-জয়েন করিয়েছিল। তাদের সবার চাকরি গেছে। জিরো টলারেন্স দল সাদা OMR জমা দেওয়াদের আবার রি-জয়েন করাবে এটাই স্বাভাবিক।"
তাঁর দাবি, "...এদের সবার চাকরি থেকে বরখাস্ত করে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।"
প্রসঙ্গত, আগামীকাল ও পরশু এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন